শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) আয়োজিত বাজেটোত্তর প্রতিক্রিয়া সভায় এই মত দেন তিনি।
ফরাসউদ্দিন বলেন, “এবারের বাজেটে মনে হয় সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ওপর আবগারি শুল্ক। এটার মধ্যে তেমন একটা রাজস্ব আদায় নেই। কোন বিবেচনায় লুপ্ত-সুপ্ত একটা বিষয় নিয়ে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ করা হলো আমি বুঝতে পারছি না।
“আমি মনে করি এই জিনিসটি বেশি আলোচনা করার আগে সরকার যদি এটা প্রত্যাহার করে নেয় তাহলে বোধহয় সবচেয়ে মঙ্গল হবে।”
জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ কোটি টাকার যে বাজেট উপস্থাপন করেছেন, তাতে বছরের যে কোনো সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি লেনদেনে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা আরোপ করা হয়েছে।
১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরাও আবগারি শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে যোক্তিক মনে করেছেন না। তারা বলছেন, এতে ব্যাংকিংয়ের বিকল্প অনানুষ্ঠানিক লেনদেনের মাধ্যমকে উৎসাহিত করা হবে।
ব্যাপক সমালোচনার মুখে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ব্যাংকে যাদের এক লাখ টাকা রাখার সামর্থ্য আছে তারা সম্পদশালী। তারা বাড়তি ভারটা বহন করতে পারবেন, সমস্যা হবে না।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “সারা বিশ্বের ১৯০ দেশের মাঝারি মূসক ১৫ শতাংশ, আর গড় হচ্ছে ১৪ শতাংশ। আর ৫৫টি নিম্ন আয়ের দেশের মাঝারি ১৪ গড় ১৩ দশমিক ৮ ভাগ।
“১৯৯১ সালে আমরা ১৫ শতাংশ মুসক দিতাম। এটা পুনঃপ্রচলন করা তেমন দোষের বলে আমি মনে করি না।”
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, “আমরা একলাখ টাকা পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে করমুক্ত করেছি। এটা ছোট অ্যাকাউন্টধারীদের সুবিধার জন্য করা হয়েছে।
“আমি মনে করি, দেশের ৮০ ভাগ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ১ লাখ টাকার নিচে।এক্ষেত্রে আমরা নিম্ন আয়ের মানুষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এটা করেছি।”
তারপরও বর্ধিত এই শুল্ক নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমি বাজারের হাওয়াটা বুঝতে পারছি। আই উইল ক্যারি দ্যা মেসেজ ব্যাক। এবং যেসব জায়গায় আমার বলার আমি বলব।
এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবিরের সঞ্চালনায় সাবেক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআরআই চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার ও নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বক্তব্য দেন।
নিহাদ কবির বলেন, “বাজেটে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের উপর যে আবগারি শুল্ক প্রস্তাব করা হয়েছে তা সাধারণ মানুষকে ব্যাংকে যেতে নিরুৎসাহিত করবে।এর ফলে ফর্মাল চ্যানেলে লেনদেন কমে যেতে পারে।”