উৎসে কর প্রত্যাহার চায় বিজিএমইএ

গত কয়েক বছরে ধারাবাহিকভাবে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমার চিত্র তুলে ধরে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত পোশাক শিল্পকে আগামী দুই বছর উৎসে করের বাইরে রাখার দাবি জানিয়েছে বিজিএমইএ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2017, 11:38 AM
Updated : 27 May 2017, 11:38 AM

শনিবার ঢাকায় বাংলাদেশ পোশাক  প্রস্ততকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইআই) ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বর্তমান বাজার পরিস্থিতিকে ‘সঙ্কটজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে আরও বেশি কিছু দাবি তুলে ধরেন।

তার দাবির মধ্যে রয়েছে-

>> পোশাক রপ্তানির উপর উৎসে কর আগামী দুই বছরে জন্য প্রত্যাহার।

>> আগামী পাঁচ বছরের জন্য করপোরেট ট্যাক্স ২০ শতাংশের বদলে ১০ শতাংশ নির্ধারণ।

>> বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া।

>> বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ বাড়াতে স্থিতিশীল রাজস্ব নীতি গ্রহণ।

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে তৈরি পোশাকসহ সব ধরনের পণ্যে রপ্তানিমূল্যের ওপর ১.৫ শতাংশ হারে উৎসে কর কাটার প্রস্তাব করা হলেও পরে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে অর্থমন্ত্রী তা শূন্য দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনেন।

বিজিএমইএ সভাপতি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ১০ বছর যেখানে এ খাতের গড় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ শতাংশ, সেখানে চলতি বছর তা কমে ২ দশমিক ২১ শতাংশ হয়েছে। অথচ গতবছরও তা ১০ শতাংশ ছিল।

ছবি: আসাদুজ্জামান প্রামানিক

নতুন বাজারে প্রবেশের চেষ্টায় আশাব্যাঞ্জক ফল না পাওয়া, গ্যাস-বিদ্যুৎ সঙ্কট ও ব্যাংকের সুদের হার বেশি থাকায় বিনিয়োগ কমে যাওয়া এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধিকে প্রবৃদ্ধি কমার পেছনে মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি।

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “বিগত চার বছরে পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট এক হাজার দুইশ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, এই শিল্পে কর্মরত শ্রমিক কমে গেছে প্রায় চার লাখ।”

এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে টিকে থাকার জন্য উৎসে কর প্রত্যাহারের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “সুতা, কাপড়, এক্সেসরিজ, ওয়াশিং ও এন্ড প্রোডাক্টে ট্যাক্স নেওয়া হয়। এক পণ্যে আর কতবার ট্যাক্স দেব?”

বাংলাদেশের প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক খাতই মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের যোগান দেয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্ব বাজারে প্রতিকূলতার মুখোমুখি হচ্ছে বলে বিজিএমইএ সভাপতি জানান।   

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাকের প্রধান দুই বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ‘নীরব মন্দার’ কারণে রপ্তানি ‘আশঙ্কাজনক’ হারে কমছে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে রপ্তানি কমেছে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ ও ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ।

অন্যদের মধ্যে বিজিএমইএ-এর সহ-সভাপতি মাহমুদ হোসেন খান, মোহাম্মদ নাসিরসহ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।