প্রযুক্তি নিরপেক্ষতাসহ তরঙ্গ নিলামে বাড়ছে ভিত্তিমূল্য

প্রায় দুই বছর ধরে ঝুলে থাকা বাড়তি টু জি ও থ্রি জি তরঙ্গ (স্পেকট্রাম) বরাদ্দে নিলামের ভিত্তিমূল্য প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

শামীম আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2017, 01:03 PM
Updated : 16 May 2017, 01:03 PM

এবার নিলামের ভিত্তিমূল্য দুই বছর আগের ভিত্তিমূল্যের চেয়ে ৭ থেকে ১০ মিলিয়ন ডলার বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির ঊধ্বর্তন এক কর্মকর্তা।

প্রযুক্তি নিরপেক্ষতাসহ (টেক নিউট্রালিটি) তরঙ্গের এই নিলাম হবে বলেই অপারেটরদের এ অতিরিক্ত টাকা গুণতে হবে বলে বিটিআরসির যুক্তি। 

মঙ্গলবার বিটিআরসির প্রধান শাহজাহান মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তরঙ্গ নিলাম নীতিমালা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই তরঙ্গ মূল্যসহ অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত করা হবে।”

তরঙ্গ নিলামে ভিত্তিমূল্য বাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, “এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজের অব্যবহৃত তরঙ্গ নিলাম প্রতি মেগাহার্টজে ভিত্তিমূল্যে ৩২ মিলিয়ন ডলার হতে পারে; কারণ টেক নিউট্রালিটি ছাড়া যদি এই তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ২৫ মিলিয়ন ডলার হয়, তাহলে টেক নিউট্রালিটিসহ এই তরঙ্গের মূল্যে ৩২ মিলিয়ন ডলার হবে।”

সম্প্রতি সচিবালয়ে এক বৈঠকে মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান উন্নত করতে তরঙ্গ (স্পেকট্রাম) নিলাম প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে বিটিআরসিকে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

প্রয়োজনের তুলনায় কম তরঙ্গ থাকায় সেবার মান উন্নত করতে পারছে না বলে অপাটেরদের ভাষ্য।

অপারেটরদের দাবির মুখে বাড়তি টু জি ও থ্রি জি তরঙ্গ (স্পেকট্রাম) বরাদ্দের জন্য নিলামের সময় পরপর দুইবার পিছিয়ে ২০১৫ সালের মে মাসে নিলামের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ায় বিটিআরসি।

তরঙ্গ নীতিমালা সংশোধন করে নতুন নীতিমালায় পরবর্তী নিলামের দিন জানানো হবে বলে সে সময় জানিয়েছিল বিটিআরসি।

বিটিআরসির কাছে থাকা এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজের অব্যবহৃত ১০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ এবং থ্রি জির ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ মোবাইল অপারেটরদের কাছে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

তরঙ্গ নিলামে ভিত্তিমূল্য ও শর্ত নির্ধারণ চূড়ান্ত না করায় বাড়তি টু জি ও থ্রি জি তরঙ্গ নিলাম প্রায় দুই বছর ধরে ঝুলে থাকে।

সে সময় নিলাম অনুষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী, এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজের ক্ষেত্রে নিলামের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছিল তিন কোটি ডলার বা ২৩২ কোটি টাকা (তৎকালীন বাজার দরে)।

দুই হাজার ১০০ মেগাহার্টজের ভিত্তিমূল্য দুই কোটি ২০ লাখ ডলার বা প্রায় ১৭০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল ওই নীতিমালায়।

বিটিআরসি’র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট কমিটির (এসএমসি) সাম্প্রতিক এক বৈঠকে নিলামের ভিত্তিমূল্য প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়।

ওই কমিটি প্রযুক্তি নিরপেক্ষতাসহ এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজের অব্যবহৃত তরঙ্গ প্রতি মেগাহার্টজ ৩৫ মিলিয়ন ডলার, থ্রি জির ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ প্রতি মেগাহার্টজ ২৭ মিলিয়ন ডলার নিলামের ভিত্তিমূল্য নির্ধারণ করে মতামত নিতে মঙ্গলবার বিটিআরসি লিগ্যাল ও লাইসেন্সসিং বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে।

৯০০ মেগাহার্টজের কিছু অব্যবহৃত তরঙ্গের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে প্রতি মেগাহার্টজের ভিত্তিমূল্য ৩০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করে ওই কমিটি।

লিগ্যাল ও লাইসেন্সসিং ইতিবাচক মতামত দেওয়ার পরই বিষয়টি বিটিআরসির কমিশন সভায় চূড়ান্ত করার পর নীতিমালা চূড়ান্ত করতে ডাক ও টেলিযোযোগ বিভাগে পাঠানো হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

টেলিযোযোগ বিভাগ নীতিমালা চূড়ান্ত করার পরপরই বিটিআরসি নিলামের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবে।