রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে স্থানীয় চাঁদাবাজি বন্ধ, ইজারার শর্ত বাস্তবায়ন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে একটি স্থায়ী পশুর হাট স্থাপন ও স্বাস্থ্যসম্মত জবাইখানা নির্মাণের দাবি পূরণ করা না হলে ১ রমজান থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করা হবে।
রবিউল বলেন, “বর্তমানে গরুর মাংসের কেজি ৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আর মুরগির মাংস মাত্র ২০০ টাকা হওয়ায় সাধারণ মানুষ গরু ও খাসির মাংস খাওয়া ছেড়েই দিয়েছে। দেশের অর্ধেকের বেশি মাংসের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে।”
ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে গাবতলীর পশুর হাটের ইজারাদার জনগণের শত শত কোটি টাকা লুটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মাংস ব্যবসায়ীদের এই নেতা।
সারা দেশেই মাংস ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজির শিকার বলে অভিযোগ করে রবিউল বলেন, “এই চাঁদাবাজি বন্ধ হলে মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। গরুর মাংসের কেজিতে ৫০ টাকা কমে আসবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ‘দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের’ সঙ্গে ইজাদারদের আঁতাতের কারণে সমস্যাগুলোর প্রতিকার হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন রবিউল।
“...সুরাহা দূরের কথা খাজনা দ্বিগুণ করা হয়েছে, হুন্ডি বেড়েছে, সীমান্ত খরচ বেড়েই চলেছে, সাথে সাথে মাংসের দামও বেড়ে চলছে।”
গাবতলী হাটের ইজারাদারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়ে রবিউল বলেন, “রাজধানীতে একটিমাত্র গরুর হাট থাকায় ইজারাদারের নানা অন্যায় ও অত্যাচার মেনে নিতে হচ্ছে।”
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে স্বাস্থ্যসম্মত পশু জবাইখানা না থাকলেও সম্পত্তি কর্মকর্তা ‘নিজস্ব বাহিনী’ দিয়ে মাংস ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ফি আদায় করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এসব সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেয়র আনিসুল হকের প্রতি আহ্বান জানান রবিউল।
গাবতলী গরু হাটের মাংস ব্যবসায়ীদের জন্য নির্মিত মেয়র হানিফ আশ্রয় কেন্দ্র ও সমিতির অফিস ইজারাদার তালা দিয়ে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
“রমজান মাস অত্যন্ত দুর্বল মাস, মুসলমান হিসেবে আমরা চাই না রমজান মানে ধর্মঘটের মতো একটা অসহনীয় কর্মসূচি হোক। যে কারণে আমরা মাংস ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি পালন করব। এতে কোনো আইনগত বাধা নেই।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য ফরিদ আহমেদ।
দাবি আদায়ে এর আগে চলতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ধর্মঘট ডেকে পরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমঝোতা হলে ১৮ ফেব্রুয়ারি তা প্রত্যাহার করেন মাংস ব্যবসায়ীরা।