প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানিয়েছেন।
বুধবার সচিবালয়ে এক সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা নয়, সেবা দেবে বলে গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারের কাছে টেলিটকের যে বকেয়া আছে সেগুলো সরকারের ‘ইক্যুইটি’ হিসেবে বিবেচনার জন্য এবং এ বিষয়ে চিঠি দিতে বলেছেন।
“টেলিটকের যে বকেয়া আছে সেগুলো সরকারের ইক্যুইটি হিসেবে বিবেচনা করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে আমরা খুব দ্রুত চিঠি পাঠাব যেন সেভাবে বিবেচনা করা হয়।”
টেলিটকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির তরঙ্গ বরাদ্দ বাবদ এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং থ্রিজি প্রকল্পে ঋণ হিসেবে নেওয়া আরও এক হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা সরকারের পাওনা রয়েছে। সব মিলে এ দেনার পরিমাণ দাঁড়ায় তিন হাজার ২৫৬ কোটি টাকা।
টেলিটকের যে বকেয়া আছে সেগুলো সরকারের ইক্যুইটি হিসেবে বিবেচিত হলে তা কোম্পানির মূলধনে পরিণত হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে একনেক অনুমোদিত ৬৭৫ কোটি টাকা খুব দ্রুত ছাড় করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী তারানা।
নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে ৬৭৬ কোটি টাকার একটি ঋণ প্রস্তাব প্রায় নয় মাস ধরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। গত বছর জুনে একনেক সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
সম্প্রতি টেলিটকের গ্রাহক ছয় লাখ বাড়ার কথা জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, টেলিটক জনগণকে সেবা দেবে, টেলিটককে ব্যবসা করার জন্য সরকার সেইভাবে রাখেনি, প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে নেটওয়ার্ক নেই সে সব অঞ্চলে সেবা দেবে টেলিটক। ”
একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী টেলিটকের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারের জন্য বিদেশি একটি কোম্পানি অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন বলে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সভার শুরুতে একথা বলা হয়েছিল, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক সময় ঠিকমত রান করতে পারে না, একটি বিনিয়োগকারী আসলে তখন সেটা রান করতে পারে। এটি ইন জেনারেল বক্তব্য দিয়েছিলেন।
“প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন টেলিটকের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হবে, তাহলে সেই নির্দেশনা অবশ্যই প্রতিপালন করব। ৬৭৫ কোটি টাকা দিয়েছেন নেটওয়ার্ক উন্নয়নে, আমরা যে আবেদন করেছি আস্থার জায়গা থেকেই এ টাকা দিয়েছেন।”
টেলিটক বড় অপারেটরদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে না পারলেও টেলিটকের সার্ভিস উন্নত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারানা হালিম।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির হিসাবে গত ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ দেশে প্রায় ১৩ কোটি গ্রাহকের মধ্যে টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা ৩৭ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি। পাঁচ কোটি ৯৩ লাখের বেশি গ্রাহক নিয়ে প্রথমে রয়েছে গ্রামীণফোন।