তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের নিয়ে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘ন্যাশনাল ডেমো ডে’ তে এই সম্মাননা দেওয়া হবে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কে এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে এ ‘ন্যাশনাল ডেমো ডে’। সারা দেশ থেকে সেরা দশ উদ্যোক্তাদের ‘স্টার্ট আপ অ্যাওয়ার্ড’ দেবে তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ।
পাশাপাশি পাশাপাশি নারী ও আঞ্চলিক পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের জন্যও রয়েছে এই পুরস্কার।
আইসিটি বিভাগের ‘উদ্যোক্তা বিশেষায়িত কর্মসূচি-স্টার্ট আপ বাংলাদেশ’ এবং উদ্যোক্তা-গবেষণা প্রতিষ্ঠান বেটার স্টোরিজ লিমিটেডের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে এ দিবস।
এ আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছে জিপি অ্যাকসেলারেটর ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিইএবি)।
যেসব উদ্যোক্তা এক বছরের বেশি সময় ধরে তথ্য প্রযুক্তিখাতে ব্যবসা করছেন, তারা এই স্টার্ট আপ অ্যাওয়ার্ডে আবেদন করতে পারবেন।
তিনি বলেন, “ন্যাশনাল ডেমো ডে একটি নতুন ধারণা। সারা বিশ্বের স্টার্ট আপ কোম্পানিগুলো যখন ভবিষ্যতের জন্য ইনভেস্টের জায়গা খুঁজছে। ইনভেস্টররা টাকা নিয়ে বসে আছে। কিন্তু তারা জানে না, কোন স্টার্ট আপ কোম্পানিতে তারা ইনভেস্ট করবে।
“আবার স্টার্ট আপরাও জানে না, কারা ইনভেস্ট করছে। অথচ তাদের একটু কোচিং, একটু মেন্টারিং করলে ওরা আরও বেশি উপার্জন করতে পারবে। এসব ধারণা থেকেই ডেমো ডের আয়োজন করা।”
ট্রাফিক সিস্টেম, ইলেক্ট্রিসিটি, পাওয়ার, এনার্জি, হেলথ-টেক, অ্যাগ্রো-টেক, শিক্ষার মতো নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কয়েক হাজার সলিউশন দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
“আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়ে এখন আর নতুন সমস্যা নাই। তাই নেই সমাধান, নেই ইনোভেশন। ইনোভেশন থাকলেও সেটাকে টেস্ট করার মতো কোনো সুযোগ নাই। সেই সুযোগ আছে ঢাকা, চট্টগ্রামে। বিশাল বাজার, দ্রুততম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে এখানে প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এ মুহূর্তে স্টার্ট আপদের গন্তব্য হিসেবে সবচেয়ে যৌক্তিক জায়গা হল বাংলাদেশ।”
সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি ইকোসিস্টেম, নতুন পলিসি গড়ে তুলতে একটি নতুন প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি। নতুন এই প্ল্যাটফর্মটি উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরও মজবুত করবেও বলেও আশা করছেন পলক।
‘ইনোভেশন ডিজাইন অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ একাডেমি’র প্রাথমিক জরিপে ৫০০ নতুন স্টার্টআপের সন্ধান পাওয়ার কথাও জানান তিনি।
পলক বলেন, “দেশে স্টার্ট আপ ইকোসিস্টেম দাঁড় করানোর জন্য যা যা করণীয় আমরা একাডেমি থেকে করব। এ মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হল ভেঞ্চার ক্যাপিটাল গাইডলাইন। দরকার বিনিয়োগের সহায়ক পরিবেশ, পলিসিগত নানা ইকুইপমেন্ট। আমরা সেটা করছি। আইসিটি ডিভিশন থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার স্টার্ট আপদের জন্য ব্লক করেছি। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা এক হাজার ইনোভেটিভ আইটি প্রডাক্ট সিলেক্ট করব।”
ন্যাশনাল ডেমো ডের আয়োজনটি সেই প্ল্যাটফর্ম ও পলিসি গড়তে সহায়ক হবে বলে মনে করেন প্রতিমন্ত্রী।
আয়োজকরা জানান, ১৪ মের মধ্যে আবেদনের সময় অবশ্যই উদ্যোক্তাকে ব্যবসায়িক নিবন্ধনের কাগজ, এক বছরের আর্থিক লেনদেনের বিবরণী, ব্যবসায়ের বিবরণের অনুলিপি সংযুক্তি হিসেবে দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে গ্রামীণফোনের সিনিয়র ডিরেক্টর ও হেড অব ট্রান্সফরমেশন কাজী মাহবুব হাসান, ভিসিপিইএবির সভাপতি শামীম আহসান ও সাধারণ সম্পাদক শওকত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।