তুলা আমদানিতে বিকল্প উৎসের খোঁজে ব্যবসায়ীরা

বস্ত্র শিল্পের প্রধান কাঁচামাল তুলার সবচেয়ে বড় আমদানিকারক বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা চীন ও ভারতের বিকল্প উৎস খুঁজছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2017, 12:41 PM
Updated : 9 April 2017, 12:41 PM

এই দুটি দেশের পাশাপাশি কিছু তুলা আফ্রিকা থেকে আমদানি হলেও পণ্য পরিবহনে বাড়তি সময় ও ব্যয়সহ নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে দেশি-বিদেশি তুলা ব্যবসায়ীদের সভায় আফ্রিকার অন্যতম প্রধান বিকল্প উৎস হয়ে উঠার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

আফ্রিকান কটন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাবাই বার্থে বলেন, “মানের কারণে বিশ্বজুড়ে আফ্রিকার তুলার কদর রয়েছে। আমরা পরিকল্পনা অনুসারে সঠিকভাবে পণ্য সরবরাহ করতে পারি।”

চীন ও ভারতের তুলনায় আফ্রিকা থেকে তুলা সামান্যই আমদানি করা হয় বলে জানান বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।

তিনি বলেন, “আমরা মূলত ভারত ও চীন থেকে কটন আমদানি করি। কিন্তু সেখানে অন্য সমস্যা আছে। তারা মাঝে মধ্যেই রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। তখন আমাদেরকে সমস্যায় পড়তে হয়।”

নতুন উৎস পেলে উৎপাদন খরচ কমলেও আফ্রিকার বিকল্প উৎস হওয়ার ক্ষেত্রে সময়ের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার তাসলিমুল হক।

সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “তবে আফ্রিকা থেকে আনতে বেশ সময় লেগে যায়। এটা সেখানকার সবচেয়ে বড় সমস্যা। শিপমেন্ট ইফেক্ট হওয়ার পর ৬ সপ্তাহ লেগে যায়, যেখানে আমরা ভারত থেকে ১৫-৩০ দিনের মধ্যে আনতে পারি।”

স্কয়ার ফ্যাশন মোট আমদানির ১০ শতাংশেরও কম আফ্রিকা থেকে করা হয় জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, তবে এটা বাড়ানো সম্ভব।”

কমিউনিক গ্রুপের মো. আনিস ফারুক বলেন, ভারত ও চীন উৎপাদিত তুলার বড় অংশ নিজেরা ব্যবহার করে। ফলে সেই বাজার ঠিক রাখতে তাদেরকে নানা পদক্ষেপ নিতে হয়; ট্যারিফ আরোপ করে, রপ্তানি বন্ধ করে দেয়।

পক্ষান্তরে বিশ্বে তুলার মাত্র ৭ শতাংশ আফ্রিকায় উৎপাদিত হলেও তার পুরোটাই তারা রপ্তানি করে দেয়।

সেজন্য আমদানির উৎস হিসেবে সেটাকে ‘সবচেয়ে বড় সুবিধা’ বলে মনে করেন আনিস।

আন্তর্জাতিক ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের উদ্যোগে ‘আফ্রিকান-এশিয়ান কটন বিটুবি মিটিং’ শীর্ষক এই সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি বলেন, “আমাদের এখানে কটনকে অন্য খাদ্য পণ্যের সঙ্গেও প্রতিযোগিতা করতে হয়। খাদ্য শস্য উৎপাদন করতে গিয়ে কটন চাষ করেন না।”

“তবে আগামী দিনগুলোতেও কটনের গুরুত্ব কমবে না। অন্তত যতদিন গার্মেন্টস আছে, ততদিন কটনেরও প্রয়োজন হবে। আগামী অন্তত ২০-২৫ বছর আমাদেরকে গার্মেন্টসের ওপরই নির্ভর করতে হবে।”

আন্তর্জাতিক ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হানি সালেম সোনবোল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ক্যালিক (Calik) কটনের স্পন্সরে আন্তর্জাতিক ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের আয়োজনে এই সভা হয়।

আগামী ১২ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার জাকার্ততে একই ধরণের অন্য আরেকটি সভা হবে।

আন্তর্জাতিক ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স কর্পোরেশন আফ্রিকায় তুলা উৎপাদনে অর্থ লগ্নি করে থাকে।