১৭ পণ্যে পাটের মোড়ক নিশ্চিতে ফের অভিযান

নির্ধারিত ১৭টি পণ্যে পাটের মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আগামী ১৫ মে থেকে সারা দেশে আবারও বিশেষ অভিযান চালাবে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2017, 12:28 PM
Updated : 9 April 2017, 12:28 PM

রোববার বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি সংরক্ষণ ও পরিবহনে আবারও প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন সব পণ্যের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কি না তা মনিটরিংয়ের জন্য আবারও ঢাকাসহ সারা দেশে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে।”

তবে এ অভিযান কতদিন চলবে তা জানাননি প্রতিমন্ত্রী।

ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি সংরক্ষণ ও পরিবহনে বাধ্যতামূলকভাবে পাটের ব্যাগ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে ২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর আদেশ জারি করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।

ছয়টি পণ্যে পাটের মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে সপ্তাহব্যাপী সারা দেশে বিশেষ অভিযান চলে। এ সময় ১ হাজার ৬০৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা জরিমানা ও ২ জনকে জেল দেওয়া হয়।

এরপর গত ২১ জানুয়ারি পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, আলু, আটা, ময়দা, মরিচ, হলুদ, ধনিয়া এবং তুষ-খুদ-কুড়ার মোড়ক হিসেবে পাটের মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়।

‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন’ অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত পণ্যে বাধ্যতামূলকভাবে পাটের মোড়ক ব্যবহার না করলে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হবে। একই অপরাধ আবার করলে সাজা হবে সর্বোচ্চ দণ্ডের দ্বিগুণ।

নতুন করে অভিযান চালাতে সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের আগের মত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মির্জা আজম।

তিনি বলেন, জেল-জরিমানা, ব্যাংক ঋণ সুবিধা বন্ধ, লাইসেন্স বাতিলসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তির বিধান রেখে প্রণিত ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন’ প্রয়োগে সংশ্লিষ্টদের আরও কঠোর হতে হবে।

বিশেষ অভিযান চলাকালে জেল-জরিমানা আরোপের বিষয়ে গুরুত্ব দিতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সভায় জানানো হয়, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ৮৪৭টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৭৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

আইনটি বাস্তবায়িত হলে প্রতি বছর ১০০ কোটি পাটের বস্তা লাগবে, এতে স্থানীয় বাজারে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়বে, চাষীরা পাটের ন্যায্যমূল্য পাবেন।

পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন বাস্তবায়নের অগ্রগতি তদারকিতে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিবদের নেতৃত্বে নয়টি তদারকি দলও গঠন করা হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়েছে।

বস্ত্র ও পাট সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য, পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোছলেহ উদ্দিন, বিজেএমসির চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুল রহমান ছাড়াও বাণিজ্য, কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।