চালের দামে বাড়ন্তি চলছেই, স্থিতিশীল সবজিবাজার

কয়েক সপ্তাহ ধরে পাইকারিতে চালের দাম বাড়তে থাকায় খুচরা বাজারে এর অতিরিক্ত প্রভাব পড়েছে; শহরে সবচেয়ে প্রচলিত মিনিকেট চাল খুচরায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৮ টাকায়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2017, 03:00 PM
Updated : 24 March 2017, 03:00 PM

চালের এই খুচরা মূল্যকে সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ বলে মন্তব্য করে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারিতে দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

অবশ্য চালের দাম বাড়লেও খুচরায় তা ৫০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এক সপ্তাহ আগে জানিয়েছিলেন নওগাঁ জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন।

তার মতে, মওসুমের শেষ সময়ে ধানের দাম বাড়ায় চালের দামও কিছুটা বেড়েছে। তবে তা অবশ্যই ৫০ টাকার ভেতরে থাকার কথা।

“ঢাকার বিক্রেতারা যাই বলুক, নওগাঁর মিলগুলোতে ৫০ কেজির বস্তা সাড়ে ২২শ টাকা থেকে ২৩শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে ৫০ টাকা পরিবহন খরচ যোগ করার পর লাভ নির্ধারণ করা উচিত,” বলেন তিনি।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকার নিউ মার্কেটে চালের খুচরা ও পাইকারি দোকানি সোলায়মান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, চালের দাম চলতি মওসুমে সর্বোচ্চ পর্যায়ে বেড়েছে। তিনি বিভিন্ন মিলের মিনিকেট চাল ৫২ থেকে ৫৬ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি করছেন।

বর্তমানে চালের পাইকারি বাজারকে যে কোনো সময়ের তুলনায় বাড়তি দাবি করে ব্যবসায়ী সোলায়মান বলছেন, সর্বশেষ চালান আনতে গিয়ে বাড়তি বাজার দেখে সে অনুযায়ী চালের দাম নির্ধারণ করেছেন তিনি।

আগের সপ্তাহে ঢাকার মিরপুর-১১ নম্বরের চালের পাইকারি ও খুচরা দোকান এসএস এন্টারপ্রাইজ মালিক আকতার হোসেন জানিয়েছিলেন, গুটি স্বর্ণার ৫০ কেজির বস্তা ১৭৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রশিদ রাইস মিলের মিনিকেট চালের বস্তা ২৪১০ টাকা, মোয়াজ্জেম মিলের চাল ২৪০০ টাকা, সাগর অটো রাইস মিলের চাল ২৩৮০ টাকা বস্তায় বিক্রি হচ্ছে।

চলতি সপ্তাহে চালের দাম নতুন করে বাড়েনি বলেও জানান তিনি।

আরেক খাদ্যপণ্য ময়দার দামও গত প্রায় তিনমাস ধরে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে খুচরা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন।

এক্ষেত্রে মিল থেকে ময়দার চালান আনতে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ভাড়া করা ট্রাক নিয়ে অপেক্ষা করাকে দাম বাড়ার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

উত্তর বাড্ডায় জনতা ট্রেডার্সের মালিক নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত ডিসেম্বরের ১২ তারিখে নারায়ণগঞ্জে সিটি গ্রুপের মিল থেকে বস্তা ১২৯৫ টাকা করে ডিও কেটে এখনও ময়দা পাইনি। মিলের বাইরে থেকে বস্তা ১৭৫০ টাকা করে কিনে এখন সাড়ে ১৮শ টাকায় ময়দা বিক্রি করছি।”

ময়দার দামের বিষয়ে কথা বলার জন্য সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। 

চাল ময়দা ছাড়া বাজারে মাছ মাংস ও সবজির দাম স্থিতিশীল আছে। তবে পহেলা বৈশাখের উৎসবকে সামনে রেখে বাড়তে শুরু করেছে ইলিশের দাম।

এদিন কারওয়ান বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে প্রতিটি ১৬শ টাকা দামে। এছাড় মাঝারি আকারের ‍রুই মাছ ২৬০ টাকা, কাতল ৩০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছিল।

মসলার বাজারে, পেঁয়াজ কেজি ২২ থেকে ২৫ টাকা, দেশি রসুন ১৮০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ১৫০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছিল কারওয়ান বাজারে।

এছাড়া চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, খিরা ১০ টাকা, ঢেড়শ ৩৫ টাকা, উচ্চে ৪০ টাকা, বেগুন ৩৫ টাকা, পটল ৪০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ৬০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছিল।