অনলাইন কেনাকাটায় ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ  

অনলাইনে কেনাকাটায় ভোক্তাদের স্বার্থহানি যেন না ঘটে, তার তদারকিতে একটি কমিটি গঠনের জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2017, 11:47 AM
Updated : 15 March 2017, 11:47 AM

বুধবার অধিদপ্তর আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ক্রমবর্ধমান অনলাইন কেনাকাটায় ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠলে এই নির্দেশ দেন তিনি।

তোফায়েল বলেন, “দেশ ডিজিটাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর সুযোগ নিয়ে কেউ যেন ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করতে না পারে।

“এসব বিষয়ে অভিজ্ঞ অনেকে আছেন। তাদেরকে নিয়ে একটি কমিটি করুন। কীভাবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা যায় তা নিয়ে এ কমিটি কাজ করবে। কীভাবে মানুষের স্বার্থ, ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা হতে পারে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন তারা।”

অনুষ্ঠানে ‘ক্রেতার আস্থাশীল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ি’ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, যাতে অনলাইনে কেনাকাটায় ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার সুযোগ না থাকার কথা বলা হয়।

তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে প্রচলিত কেনাবেচার পদ্ধতি বদলে যাচ্ছে সারাবিশ্বে। বাংলাদেশে ডিজিটাল বাণিজ্যের রূপান্তর এখনও প্রবলভাবে দৃশ্যমান না হলেও ২০২১ সাল নাগাদ দেশের মোট ব্যবসার প্রায় অর্ধেক ডিজিটাল বাণিজ্য দখল করে নিবে।

ডিজিটাল বাণিজ্যের যুগে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কিছু চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে তা মোকাবেলায় ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন’ করার তাগিদ দেন এই তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।

তিনি বলেন, আইন না থাকায় ডিজিটালের নামে অনেক ক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। প্রচলিত বা বিদ্যমান আইন ডিজিটাল দুনিয়ায় ভোক্তার অধিকারকে সংরক্ষণ করছে না।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “দেখা গেল, কোনো ক্রেতা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একটি পণ্যের ফরমায়েশ দিলেন। কিন্তু তিনি যে পণ্যটি দেখেছিলেন, বাস্তবে সেটি নাও পেতে পারেন। একইভাবে বিক্রেতাও ক্রেতার কাছ থেকে পণ্যের মূল্য পেলেন না।”

সেমিনারে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ভোক্তা অধিকার নিয়ে সচেতনতার অভাব ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠায় বড় বাধা।

“ভোক্তারা তাদের অধিকার নিয়ে সচেতন না। এটা বাড়াতে হবে। এজন্য ক্যাবের পাশাপাশি সরকারকেও কাজ করতে হবে।”

তবে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শফিকুল ইসলাম লস্কর দাবি করেন, ভোক্তারা অধিকার সচেতন হচ্ছে।

এর পক্ষে তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, “২০১৬ সালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে ১ হাজার ৬২২টি অভিযোগ এসেছিল। এ বছর প্রথম দুই মাসেই অভিযোগ এসেছে ১ হাজার ৬৮২টি। এ সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে মনে হয়।”

বাণিজ্যমন্ত্রী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরও গতিশীল করার তাগিদ দেন।

“আমাদের ইউনিয়ন, থানা, জেলা, বিভাগীয় অফিস আছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। তবে যেভাবে আছে সেভাবে না। এটাকে আরও বেশি গতিশীল করতে হবে।”