মোবাইল ব্যাংকিংয়ের খরচ কমাতে চেষ্টা হচ্ছে: অর্থমন্ত্রী

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের খরচ আরও কমাতে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2017, 11:45 AM
Updated : 11 March 2017, 11:45 AM

শনিবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ব্যাংকে গিয়ে সময় ব্যয়ের বিপরীতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তুলনামূলক কম খরচে গ্রাহককে ব্যাংকিং সেবা দেওয়া সম্ভব। সরকারের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

“বাংলাদেশ ব্যাংক এই সেবার সার্ভিস চার্জ কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও মোবাইল অপারেটরের সঙ্গে একাধিকবার সভা করেছে। ভবিষ্যতে আরও কম খরচে এই সেবা দেওয়া যাবে।”

সরকারি দলের এম আবদুল লতিফের ওই প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আরও জানান, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দৈনিক ৬৯০ কোটি টাকা লেনদেন হয়।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কোনো একাউন্ট থেকে এক হাজার টাকা উত্তোলন (ক্যাশ আউট) করতে বর্তমানে সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ ১৮ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত চার্জ দিতে হয়।

এই চার্জের পরিমাণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে আলোচনার পর মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সঙ্গে বৈঠকও করা হয়েছে বলে গত ৬ মার্চ জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র শুভংকর সাহা।

এর গত ১১ জানুয়ারি মোবাইল ব্যাংকিং সেবার লেনদেন সীমা কমিয়ে আনতে এক সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন একজন গ্রাহক তার মোবাইল হিসাবে সর্বোচ্চ ২ বারে ১৫ হাজার টাকা নগদ জমা এবং ১০ হাজার টাকা নগদ উত্তোলন করতে পারেন। এভাবে মাসে তিনি ২০ বারে এক লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ জমা এবং ১০ বারে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ উত্তোলন করতে পারেন।

একটি মোবাইল হিসাবে নগদ অর্থ জমা হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫ হাজার টাকার বেশি উত্তোলন করা যায় না। এই নির্দেশনা শুধু মোবাইল হিসাবে ক্যাশ ইন হলেই প্রযোজ্য। এ নিয়ম প্রতিষ্ঠানের বেতন, পোশাক শ্রমিকদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল, মার্চেন্ট পেমেন্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে সংসদে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, “গত ১০ বছরে বিনিয়োগ বেড়ে জিডিপির ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২৮ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরে বিনিয়োগ ৫ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে হবে, যা জিডিপির ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ হবে।”

মন্ত্রী আরও বলেন, “২০২০ সালের মধ্যে জাতীয় আয়ে শিল্প খাতের অবদান ৩৩ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।”

এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “ব্যাংক খাতের অর্থ জালিয়াতি রোধে এটিএম বুথে বাধ্যতামূলকভাবে এন্টি স্কিমিং ও পিন শিল্ড ডিভাইস বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

পিনু খানের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ইসলামী ব্যাংক ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২০ কোটি ৫০ লাখ টাকা পরিচালন মুনাফা অর্জন ক​রেছে।

ওয়াসিকা আয়শা খানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে দেশে রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম ছয় মাসে আদায় হয়েছে ৭৮ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা।

আমিনা আহমদের প্রশ্নের জবাবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, “ফেইসবুকে ধর্মের নামে প্রতারণা বন্ধে গত দেড় বছরে ১৯৬টি একাউন্ট বন্ধ করার জন্য ফেইসবুক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়। এর মধ্যে তারা ৮৭টি একাউন্ট বন্ধ করেছে।”

প্রশ্নোত্তরের আগে বিকাল ৩টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।