রপ্তানি আয়েও ধাক্কা

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের মতো বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ও ধাক্কা খেয়েছে।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2017, 03:38 PM
Updated : 8 March 2017, 03:38 PM

সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে গত বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে সাড়ে ৪ শতাংশ রপ্তানি আয় কম এসেছে। এই মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ।

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা এজন্য ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্যের দাম কমে যাওয়াকে দায়ী করছেন।

বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে পোশাকের দাম কমায় রপ্তানিতে ধীরগতি চলছে।

“আমরা আশা করেছিলাম, গত অর্থবছরের মতো এবারও ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হবে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা গেলেও গতবারের চেয়ে বেশ কম হবে।”

 

বুধবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ২ হাজার ২৮৩ কোটি ৬২ লাখ (২২.৮৪ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে।

এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ২২ শতাংশ বেশি। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ কম।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই আট মাসে মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮২ শতাংশ এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে।

এই খাতে ২ দশমিক ৮২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ।

ফেব্রুয়ারি মাসে ২৭২ কোটি ৬১ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ২৮৫ কোটি ৪২ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।

এই ফেব্রুয়ারি মাসে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০১ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে অর্থাৎ জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে তৈরি পোশাক খাত থেকে ১ হাজার ৮৬৩ কোটি ৮৮ লাখ (১৮.৬৩ বিলিয়ন) ডলারের রপ্তানি আয় দেশে এসেছে।

ছবি: আসাদুজ্জামান প্রামানিক

গত অর্থবছরের এই আট মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে ১ হাজার ৮১২ কোটি ডলার আয় হয়েছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৭ শতাংশ কমেছে।

অন্যান্য খাতের আয়

জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে ৮২ কোটি ৭৬ লাখ, পাট ও পাটজাত পণ্যে ৬৪ কোটি ৬৬ লাখ, কৃষিজাত পণ্যে ৩৫ কোটি ২৬ লাখ, হিমায়িত খাদ্যে ৩৫ কোটি ৭৫ লাখ, প্রকৌশল পণ্যে ৩৩ কোটি, প্লাস্টিক পণ্যে ৮ কোটি ২৩ লাখ ডলার আয় হয়েছে।

বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পোশাকের দরপতন হয় ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ।ওই বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮টি দেশে গড়ে দরপতন হয় দশমিক ৭৬ শতাংশ।

ফাইল ছবি

২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পোশাকের দরপতন হয় ১ দশমিক ১ শতাংশ। ইউরোপের বাজারে দর কমেছে ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরে মোট রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে ৩ হাজার ৭০০ কোটি (৩৭ বিলিয়ন) ডলার।

গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ে প্রায় ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।