ইস্পাহানি চেয়ারম‌্যান মির্জা আলী বেহরুজ মারা গেছেন

দেশের অন‌্যতম পুরনো ব‌্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারম‌্যান মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানি মারা গেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2017, 09:41 AM
Updated : 23 Jan 2017, 02:51 PM

ইস্পাহানি গ্রুপের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার পর ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মির্জা আলী বেহরুজের মৃত‌্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।

চা, টেক্সটাইল, খাদ্য, পাট, শিপিংসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় দুইশ বছর ধরে ব‌্যবসা চালিয়ে আসা এম এম ইস্পাহানি গ্রুপ ফাইনানশিয়াল এক্সপ্রেসেরও অংশীদার।

সোমবার আসরের পর গুলশান আজাদ মসজিদ ও মাগরিবের পর পুরান ঢাকার হোসনি দালানে আলী বেহরুজ ইস্পাহানির দুই দফা জানাজা হয়। পরে হোসনি দালানের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয় বলে জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

দেশের অন্যতম পুরনো পুঁজিপতি পরিবার ইস্পাহানি পরিবারের উত্তরসূরী আলী বেহরুজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ও মাইডাসের পরিচালক ছিলেন।

ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল,  ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ‌্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির (আইইউবি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

২০০৪ সালে ইস্পাহানি গ্রুপের দায়িত্ব নেওয়া আলী বেহরুজ পড়াশোনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশে অর্থ-বাণিজ‌্যের ইংরেজি দৈনিক ফাইনানশিয়াল এক্সপ্রেসের একজন উদ্যোক্তা পরিচালক ছিলেন তিনি।

ভারতীয় উপমহাদেশে এমএম ইস্পাহানি গ্রুপ চায়ের জন‌্য বিখ‌্যাত হলেও তাদের ব‌্যবসা ছড়িয়ে আছে নানা খাতে। বর্তমানে প্রায় দশ হাজার মানুষ কাজ করছে এ কোম্পানিতে।

ইস্পাহানি পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা হাজী মোহাম্মদ হাশেম ইস্পাহানি ১৮২০ সালে পারস্যের ইস্পাহান শহর থেকে ভারতের মুম্বাইয়ে এসে ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ইস্পাহানিদের ব্যবসা ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

হাজী হাশেমের দৌহিত্র মির্জা মেহেদী ইস্পাহানি তার ব্যবসায়িক সদর দপ্তর মাদ্রাজে স্থানান্তর করেন। তিনি ঢাকায় শাখা খোলেন ১৮৮৮ সালে।

আর তার তিন ছেলে মির্জা আহমেদ ইস্পাহানি, মির্জা আবুল হাসান ইস্পাহানি ও মির্জা মাহমুদ ইস্পাহানি ১৯৩৪ সালে এমএম ইস্পাহানি নামে একটি লিমিটেড কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।

মির্জা আবুল হাসান ইস্পাহানি পরে মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন এবং ৫০ এর দশকে পাকিস্তানের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৪৭ সালের পর ইস্পাহানি পরিবারের কর্পোরেট হেড অফিস চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়। কোম্পানির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেন আহমেদ ইস্পাহানির ছেলে মির্জা মেহেদী ইস্পাহানি (একেএ সদরী ইস্পাহানি)। তার সময়ে ইস্পাহানি কোম্পানি সিলেটের চা বাগানগুলোতে প্রচুর বিনিয়োগ করে।

বাংলাদেশের চা শিল্পে ইস্পাহানি গ্রুপের অবস্থান এখনও শীর্ষে। ১৯৪৭ সালের আগে ইস্পাহানি কোম্পানি ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় পাট রপ্তানিকারক ছিল।

ঢাকায় ইস্পাহানি চক্ষু হাসপাতাল এবং এমএ ইস্পাহানি ইন্সটিটিউট অব অফ্থ্যালমিআলজি ছাড়াও বাংলাদেশে বহু দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে ইস্পাহানি পরিবার।