রপ্তানিতে আশা জাগাচ্ছে গার্মেন্ট একসেসরিজ

পোশাক রপ্তানি থেকে ২০২১ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, তা অর্জনে গার্মেন্ট উপকরণ রপ্তানি থেকেই ১৮ বিলিয়ন ডলার আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2017, 06:57 PM
Updated : 18 Jan 2017, 06:57 PM

বুধবার ঢাকার বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী পোশাক শিল্পের বিভিন্ন সহায়ক পণ্যের প্রদর্শনীর উদ্বোধনী পর্বে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদও একই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে আশ্চর্য রকমের অগ্রগতি হচ্ছে, যা এক সময় কল্পনাও করা যেত না। ২০২১ সালের মধ্যে গার্মেন্ট একসেসরিজ রপ্তানি করে ১৮ বিলিয়ন ডলার আয় অসম্ভব কিছু নয়।”

বিআইডিএসের নাজনীন আহমেদ বলেন, পোশাক শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ এখন একটা পৃথক ইন্ডাস্ট্রি। একসেসরিজ প্রডাকশনকে সাপোর্ট দিতে হবে, পৃথক ল্যাবরেটরি স্থাপন করতে হবে।

“বায়ারদের চাহিদা থাকে বিদেশ থেকে বিভিন্ন একসেসরিজ আমদানি করে পোশাক নির্মাণের। তাদের এসব চাহিদা নিয়ে গবেষণা করতে হবে। একই ধরনের একসেসরিজ দেশে তৈরি করা যায় কি না সে বিষয়ে গবেষণা চালাতে হবে। ফলে এসব একসেসরিজ খুব সহজে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে ও রপ্তানি করা যাবে।”

এতে করে শিল্পের স্থায়িত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ও উৎপাদন খরচ কমবে বলে মন্তব্য করেন এই গবেষক।

পোশাক ব্যবসায়ী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, কয়েক দশকের ব্যবধানে এই শিল্প অনেক দূর এগিয়েছে। এক সময় এখানে ‘সাইজ লেবেল’ এর মতো ক্ষুদ্র উপকরণও পাওয়া যেত না। হংকং কিংবা অন্য কোনো দেশ থেকে আমদানি করতে গিয়ে লিড টাইম বেড়ে যেত, বায়াররা অন্যত্র ফিরে যেত।

“এখন বাংলাদেশ বহু দেশে একসেসরিজ রপ্তানি করছে। নতুন একটি খাতে পরিণত হচ্ছে।”  

তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ১০ হাজার ডলারের রপ্তানি দিয়ে শুরু হওয়া এই খাত এখন ২৮ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি খাতে পরিণত হয়েছে। এর পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে একসেসরিজ, যা আগে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হত।

এফবিসিসিআই নেতা শফিউল ইসলাম বলেন, দেশের একসেসরিজ খাত বড় হলে তা পণ্যের উৎপাদন খরচ কমাতে সহায়তা করে। পাশাপাশি লিড টাইমও কমে আসে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস একসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি আব্দুল কাদের খান বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো পোশাক রপ্তানিকে হিসাব করলেও এর একসেসরিজ নিয়ে পৃথক কোনো ডেটা প্রকাশ করে না। একসেসরিজ খাতকে পৃথক শিল্পের মূল্যায়ন দিলে এই খাত আরও সমৃদ্ধ হবে।

চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে ২৪টি দেশের ৪০০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, শ্রীলঙ্কা, ইতালি, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, জাপান, তাইওয়ান, সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, থাইল্যান্ড, কলম্বিয়া, মালয়েশিয়া, কানাডা, স্পেন, ফ্রান্স ও হংকংয়ের প্রতিষ্ঠান রয়েছে এখানে।

প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে।

জাকারিয়া ট্রেড অ্যান্ড ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল, এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ গার্মেন্ট একসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েসন (বিজিএপিএমইএ) সম্মিলিতভাবে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।