ভালুকায় চালু হচ্ছে কোকা-কোলার কারখানা

ময়মনসিংহের ভালুকায় সমন্বিত কারখানা চালুর মধ‌্য দিয়ে বাংলাদেশে ব‌্যবসা সম্প্রসারণের নতুন অধ‌্যায়ের সূচনা করছে কোমল পানীয় উৎপাদনকারী বহুজাতিক কোম্পানি কোকা-কোলা।

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2017, 04:30 AM
Updated : 18 Jan 2017, 10:40 AM

কোকা-কোলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড ভালুকায় এ কারখানা করছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বুধবার এ কারখানার উদ্বোধন করবেন।

বাণিজ‌্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে কোকা-কোলাকে স্বাগত জানিয়ে সরকারের তরফ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট আটলান্টাভিত্তিক এ কোম্পানির বাংলাদেশে নিজস্ব কারখানা খোলার বিষয়টিকে বর্ণনা করেছেন ‘এক নতুন অধ‌্যায়ের সূচনা’ হিসেবে।  

তিনি বলেছেন, কোকা-কোলার এই নতুন প্রকল্প সাফল‌্য পেলে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগে আগ্রহী হবে আমেরিকান কোম্পানিগুলো।

কোকা-কোলার এশিয়া-প‌্যাসিফিক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট জন মারফিও কারখানা উদ্বোধন উপলক্ষে ঢাকায় এসেছেন।

ভালুকার কারখানার জন‌্য সাড়ে সাত কোটি ডলার বিনিয়োগ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, “আমরা বাংলাদেশে আমাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করছি।... আশা করছি, এই বিনিয়োগ বাংলাদেশে ও এ দেশের মানুষের জন‌্য আরও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।”

মঙ্গলবার ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের ২০ বছর পূর্তি ও কোকা-কোলার কারখানা উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন তোফায়েল আহমেদ ও জন মারফি।  

পাকিস্তান আমলে ১৯৬৫ সালে তাবানি বেভারেজের সঙ্গে চুক্তির মধ‌্য দিয়ে বাংলাদেশে ব‌্যবসা শুরু করে কোকা-কোলা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাবানি চলে যায় মুক্তিযোদ্ধা কল‌্যাণ ট্রাস্টের অধীনে। তাদের সঙ্গেই ২০০৮ পর্যন্ত ব‌্যবসা করে কোকা-কোলা।   

বর্তমানে আবদুল মোমেন লিমিটেড ও ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজেস প্রাইভেট লিমিটেড কারখানায় কোকা-কোলার পানীয় বোতলজাত করা হয়।

কোকা-কোলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভালুকার কারখানায় কোকা-কোলা, স্প্রাইট, ফানটা এবং জুস ও পানি বোতলজাত করা হবে।

বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে দৈনিক ১৯০ কোটি পণ্য বিক্রি করে কোকা-কোলা; বছরে বিক্রি হয় ২০ বিলিয়ন ডলারের পণ‌্য। আর ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশে ১০ কোটির বয়স ৩০ বছরের নিচে। বিশাল এই ভোক্তা বাজারকে কাজে লাগাতেই নতুন বিনিয়োগ নিয়ে এসেছে কোকা-কোলা। 

রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, কোকা-কোলার এই নতুন কারখানা বাংলাদেশে নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ‌্য বাড়াবে।

বাংলাদেশে কোকা-কোলার নতুন বিনিয়োগের সিদ্ধান্তকে এ দেশের ক্রমবর্ধমান ভোক্তা বাজারের ওপর আস্থার প্রমাণ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, অন‌্যান‌্য বহুজাতিক কোম্পানিও এ ব‌্যাপারে আগ্রহী হবে বলে তিনি আশা করছেন।

অবশ‌্য পণ‌্য ও সেবা বাণিজ‌্যে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে আরও অনেক কাজ বাকি বলে তিনি মন্তব‌্য করেন।

এ বিষয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, সরকারি কর্মপদ্ধতির জটিলতা, নিরাপদ কর্ম পরিবেশ ও শ্রমিক অধিকারের বিষয়গুলোর ওপর জোর দেন বার্নিকাট। বিশ্ব বাণিজ‌্যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা পেতে পারে বলেও তিনি মন্তব‌্য করেন। 

একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ‌্যের সবচেয়ে বড় গন্তব‌্য যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৯৬ সালে অ‌্যামচেম প্রতিষ্ঠার সময় দুই দেশের বাণিজ‌্যের পরিমাণ যেখানে দেড় বিলিয়ন ডলার ছিল, ২০১৫ সালে তা বেড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।