কলড্রপ ও ক্ষতিপূরণের তথ্য প্রতিমাসে  

প্রতিমাসে কলড্রপের সংখ্যা এবং ক্ষতিপূরণের হিসাব মোবাইল ফোন অপারেটরদের বাধ্যতামূলকভাবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে পাঠাতে হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2017, 01:48 PM
Updated : 16 Jan 2017, 01:52 PM

সোমবার সচিবালয়ে অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

সেবার মান, কলড্রপ ও বিভিন্ন নির্দেশনা বাস্তবায়ন পর্যালোচনা বিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন তারানা।

কলড্রপের ক্ষতিপূরণ নিয়ে আলোচনার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “অপারেটরদের অভিমত ও বিটিআরসির যে মতামত, তা ধর্তব্যে নিয়ে দেখা যাচ্ছে আইটিইউর (আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থা) নির্ধারিত কলড্রপের যে মান আছে অপারেটরদের মতো, তারা যে কাগজ জমা দিয়েছেন, তার নিচেই কল ড্রপ হচ্ছে।”

“এরপরও যদি অতিরিক্ত হয় তারা এর ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করেছেন। এসএমএসের মাধ্যমে অবগত করেছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।”

কলড্রপের ক্ষেত্রে আইটিইউর একটি নির্ধারিত মান আছে। শতকরা তিনটি পর্যন্ত কলড্রপ হলে সেটাকে মানসম্মতই ধরে নেওয়া হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমরা যেহেতু গ্রাহক পর্যায়ে অভিযোগটি (কলড্রপের) পাচ্ছি, আমরা বলেছি প্রতিমাসে আইটিইউ নির্ধারিত মানের বাইরে কতটি কলড্রপ হল, কতটি কলড্রপের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হল, এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহককে জানানো হল, এ বিষয়ে বাধ্যতামূলকভাবে একটি প্রতিবেদন বিটিআরসিকে দিতে হবে।

“যার কপি বিটিআরসি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে, যাতে মন্ত্রণালয় পুরো বিষয়টি সুপারিভিশন করতে পারে।”

অপারেটরদের জানুয়ারি মাসের প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারিতে পাঠাতে বলা হয়েছে বলে জানান তারানা হালিম।

গত বছর জানুয়ারি মাসে মোবাইল ফোনে প্রতি কলড্রপে এক মিনিট করে ক্ষতিপূরণ দিতে অপারেটরগুলোকে নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। তবে এই ক্ষতিপূরণ কোন প্রক্রিয়ায় দেওয়া হবে, তা নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও অপারেটরদের মধ্যে বারবার বৈঠক হলেও তা কার্যকর হয়নি।

বৈঠকে টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শওকত মোস্তফা বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী বাংলালিংক ছাড়া আর কেউ কলড্রপে ক্ষতিপূরণ দেয়নি।

অপারেটরদের সেবার মান নিয়ে তারানা হালিম বলেন, “কোয়ালিটি অব সার্ভিস এনশিওর করতে তারা দুটো মেইন সমস্যার কথা বলেছেন। একটি হচ্ছে তারা বলেছেন, এখন ডাটা ডিমান্ড খুব বেশি সেকারণে প্রচুর স্পেকট্রাম কনজাম্পশন হয়। ভয়েসের ক্ষেত্রে এ ব্যবহারটা একটা কম এবং কিছুটা ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছে।”

এ সমস্যা সমাধানে অপারেটররা দুটি সহযোগিতা চেয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “একটি হল অবকাঠামোর অ্যাকটিভ শেয়ারিং, আরেকটি টেক নিউট্রালিটি (প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার- যে কোনো তরঙ্গে যে কোনো প্রযুক্তি সেবা)। এদুটো বিষয় আমার ‍নিশ্চিত করতে পারি তারা বলেছেন তারা কোয়ালিটি অব সার্ভিস আরও ইম্প্রুভ করতে পারবেন।”

 “বৈঠকে আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, বিটিআরসিটি অবকাঠামো অ্যাকটিভ শেয়ারিং এবং টেক নিউট্রালিটির ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এ মাসের মধ্যে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।”

অপারেটরদের বিভিন্ন প্যাকেজের বিষেয় নিয়ে তারানা হালিম বলেন, “তারা বলেছেন প্যাকেজ বাস্তবায়ন করেছেন, আমার এ বিষয়ে পুনরায় র্নিদেশনা দিয়েছি যে গ্রাহক গ্রহণ করলেই কেবল প্যাকেজগুলো অ্যাকটিভেট করা হবে।”

বিদেশে মিস কল দিলে টাকা কাটা যায় গ্রাহকদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ আছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “অপারেটররা জানিয়েছেন, এ রকম হয়না, এটা টেকনিক্যালি সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বিটিআরসির কর্মকর্তারা সময়ে সময়ে বিদেশে মিসকল দিয়ে এ বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখবেন। যদি টাকা কাটা হয় সে অনুযায়ী অপারেটরদের নির্দেশনা দেবে বিটিআরসি।”

এ সময় টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পেটার-বি ফারবার্গ, বাংলালিংকের সিইও এবং এমডি এরিক অস, রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গিয়াস উদ্দিন আহমেদসহ অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।