বিনিয়োগের সব বাধা দূর হবে: ইইউকে বাণিজ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশে বিনিয়োগে সব ধরনের বাধা দূর করে দেওয়া হবে বলে ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2016, 01:28 PM
Updated : 9 Dec 2016, 03:30 AM

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ‘দ্বিতীয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন-বাংলাদেশ বিজনেস ক্লাইমেট ডায়ালগ’ শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বিনিয়োগে যদি কোনো বাধা থাকে আলোচনার মাধ্যমে সব দূর করা হবে, এই নিশ্চয়তা আমরা তাদের (ইইউ প্রনিনিধি দল) দিয়েছি।”

ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়ের মায়াদনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সংলাপে বসেন।

পরে তোফায়েল বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিনিয়োগের জন্য আমরা নিজেরাই খুব ইন্টারেস্টেড।তারা যদি বিনিয়োগ করতে আসে আমরা তাদেরকে সর্বাত্মক সাহায্য-সহযোগিতা দেব।”

ইইউ রাষ্ট্রদূত মায়াদন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা নিরসনে সন্তোষজনক আলোচনা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে স্বচ্ছতা, প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও নীতিমালার ভিত্তিতে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন ছাড়াও বৈষম্য কমানো নিয়ে বৈঠকে আলাচনা হয়েছে বলে জানান ইইউ রাষ্ট্রদূত।

তোফায়েল বলেন, “এই পাঁচটি এরিয়ার জন্য উভয় পক্ষে পাঁচটি কমিটি আছে। প্রত্যেকটাতে আমাদেরও প্রতিনিধি আছে। তারা বসে যেসব ছোটখাট সমস্যা আছে সেগুলো চিহ্নিত করেছে, সেগুলো সমাধানে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভবিষ্যতেও এভাবে তারা বসবে।

“যখনই কোনো সমস্যা হবে তখনই আমরা এটা নিরসনের জন্য চেষ্টা করব। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো কাজ, বিনিয়োগ আমাদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হবে না বরং আমরা তাদের পাশে দাঁড়াবার জন্য চেষ্টা করব।”

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর কোম্পানি বাংলাদেশে যেন বিনিয়োগ করতে আসে সে ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি। আমাদের শিল্পনীতি সম্পর্কে বলেছি ওটা খুব লিবারেল ও আকর্ষণীয়। কারণ আমরা হানড্রেড পারসেন্ট ক্যাপিটাল অ্যালাউ করি। ক্যাপিটাল, প্রোফিট, ডিভিডেন্ট যে কোনো সময় তারা নিয়ে যেতে পারবে।

“মোট রপ্তানির ৫৫ শতাংশ ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি করে থাকি। এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন অস্ত্র ছাড়া আমাদের সব পণ্যে ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি মার্কেট একসেস দিয়েছে।”

১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে ২৩টির কাজ ‍শুরু হওয়ার কথা জানিয়ে তোফায়েল বলেন, “আমরা বলেছি, কোনো একটা স্পেশাল ইকোনমিক জোন নিয়ে যদি ইউরোপীয় কোম্পানি বিনিয়োগ করতে চায় আকর্ষণীয়ভাবে তাদের বরাদ্দ দেওয়া হবে।”

‘কাস্টমস ডিউটি’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তোফায়েল বলেন, বিশ্বায়ন ও উদারীকরণের ফলশ্রুতিতে দেশে আগে যে কাস্টম ডিউটি ছিল সেটা এখন নিচের দিকে কমে এসেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেশীয় শিল্পকে সংরক্ষণের জন্য কিছু ডিউটি আরোপ করে থাকি।

“যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ শতাংশের বেশি ডিউটি দিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে হয়। ব্রাজিলে, রাশিয়াতে ডিউটি অনেক বেশি। এসব সামনে রেখেই ইইউর সঙ্গে আলোচনা করেছি।”

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন ছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, সুইডেন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।