অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী মঙ্গলবার এই দিন ঠিক করে দেন।
সরকারের পাওনা পৌনে পাঁচশ কোটি টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় গত জুলাই মাসে সিটিসেলের কার্যক্রম বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি)। পরের মাসে তাদের নোটিস দেওয়া হয়েছিল।
ওই নোটিসের পর সিটিসেল আদালতে গেলে আপিল বিভাগ টাকা পরিশোধ সাপেক্ষে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সিটিসেলকে দুই মাস সময় দেয়। গত ২৯ অগাস্ট আদালতের ওই আদেশ হয়।
বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব সেদিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ১৭ অগাস্টের আগ পর্যন্ত সিটিসেলের কাছে বিটিআরসির পাওনা ৪৭৭ কোটি টাকা দুই দফায় পরিশোধ করতে হবে। তাছাড়া ১৭ অগাস্টের পর থেকে প্রতিদিন বিটিআরসি আরও ১৮ লাখ টাকা করে পাওনা হচ্ছে। প্রতিদিনের এই টাকা অবিলম্বে পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেছে, টাকা না পেলে বিটিআরসি যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে।
এরপর গত ২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ স্থগিত করে বিটিআরসি। ওইদিন সন্ধ্যায় বিটিআরসির কর্মকর্তারা র্যাব-পুলিশ নিয়ে মহাখালীতে সিটিসেলের প্রধান কার্যালয়ে ঢুকে বন্ধের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন।
টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সেদিন জানান, এক মাসের প্রথম কিস্তিতে নির্ধারিত ৩১৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার মধ্যে সিটিসেল মাত্র ১৩০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।
তরঙ্গ বন্ধের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সোমবার চেম্বার আদালতে আবেদন নিয়ে আসেন সিটিসেলের আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার চেম্বার আদালতে সিটিসেলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক।
তাদের বক্তব্য শুনে বিচারক বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
সিটিসেলের কাছে বিটিআরসির পাওনার পরিমাণ ২৩০ কোটি টাকা দাবি করে এই আইনজীবী বলেন, “এর দুই-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ ১৪৪ কোটি টাকা ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। সে অবস্থান থেকে আদালতে তরঙ্গ স্থগিতের বিষয়ে আবেদন করা হয়েছে।”
সিটিসেলের তরঙ্গ আবার চালু হবে কি না- আপিল বিভাগে শুনানির পর তা জানা যাবে বলে মন্তব্য করেন মাহবুব শফিক।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ স্থগিতের সিদ্ধান্তে চেম্বার আদালত স্থগিতাদেশ দেয়নি। বিষয়টি নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়েছে। সুতরাং ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সিটিসেলের তরঙ্গ স্থগিতই থাকছে।”
১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে লাইসেন্স পায় বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিএল), পরে মালিকানার হাতবদলে যা বর্তমান সিটিসেলে পরিণত হয়।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ কোম্পানির ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক বিএনপি নেতা মোরশেদ খানের প্যাসিফিক মোটরস লিমিটেড।
এছাড়া সিঙ্গাপুরের সিংটেল এশিয়া প্যাসিফিক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এর ৪৫ শতাংশ এবং ফার ইস্ট টেলিকম লিমিটেড ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক।