সম্প্রতি দেশটির অ্যান্টি-ডাম্পিং অ্যান্ড অ্যালাইড ডিউটিজ (ডিজিএডি) অধিদপ্তরের এই সুপারিশের বিষয়ে সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
দীর্ঘদিন ধরে ভারতের জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (আইজেএমএ) স্থানীয় শিল্প ধ্বংসের অভিযোগ তুলে এই দুই দেশের পাট আমদানির ওপর শুল্ক আরোপের দাবি জানিয়ে আসছে, যার প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিজিএডি তদন্তও শেষ করেছে।
বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বিভিন্ন পাটজাত পণ্যে টনপ্রতি ১৯.৩০ ডলার থেকে ৩৫১.৭২ ডলার পর্যন্ত এবং নেপালের পাটজাত পণ্যে টনপ্রতি ৮.১৮ ডলার থেকে ৩৯.৯০ ডলার পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সুপারিশ করেছে ডিজিএডি।
এসব পণ্যের মধ্যে পাটের সুতা, চট ও চটের ব্যাগ রয়েছে।
শুল্ক আরোপের এই খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে এর মধ্যে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) বলেছে, এই সুপারিশ কার্যকর হলে বাংলাদেশের পাট চাষী এবং পাট পণ্য উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
ডিসিসিআইয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারত বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বৃহৎ পাট ও পাটজাত পণ্যের আমদানিকারক দেশ। অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা হলে পাট রপ্তানিতে বাধা পড়বে, যা দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য কমাবে।
তবে ডিজিএডি বলছে, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আমদানি বাধা দেওয়া এই অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপের উদ্দেশ্য নয়।
“ভোক্তারা এখনো আরও দুই বা ততোধিক সরবরাহের উৎস ব্যবহার করতে পারবেন।”
ভারতের স্থানীয় বাজারের ৪২ শতাংশ দখলে রাখা ১৭টি পাটকল সরকারের কাছে অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ থেকে পাট রপ্তানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা থাকায় বাংলাদেশি উৎপাদকরা স্থানীয় বাজারের চেয়ে কম দামে ভারতে পাট বিক্রি করতে পারছে। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
ডিজিএডির এই সুপারিশের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার অবগত রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “এবিষয়ে গত সপ্তাহে আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিক একটা বিবৃতি পাঠিয়েছি।”
সেটা গৃহিত হলেই ভারতের সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (সাফটা) আওতায় ভারতে শূন্য শুল্কে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে আসছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, বাংলাদেশ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রায় ৯১৯ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করেছে।
এই মোট রপ্তানির ২০ শতাংশ গেছে কেবলমাত্র ভারতে, যা সেখানকার বাজারের প্রায় ৮ শতাংশ।
এছাড়া বাংলাদেশ শুধু ভারতের বাজারে প্রতি বছর ১ দশমিক ১০ লাখ টন পাটের সুতা রপ্তানি করে।