শ্রমিকদের সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টা খাটাতে পারবে বিএটিবি

তামাক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটিবি) তাদের শ্রমিকদের সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার স্থলে ৬০ ঘণ্টা করে খাটাতে পারবে বলে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শ্রম ও কর্মংস্থান মন্ত্রণালয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2016, 06:45 PM
Updated : 1 Oct 2016, 07:58 PM

গত ২১ সেপ্টেম্বর জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে শ্রমিকদের কর্মঘণ্টা সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টা পর্যন্ত অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ কয়েকটি ধারার বিধানের প্রয়োগ থেকেও শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য বিএটিবিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

শ্রম আইন অনুযায়ী কোনো শ্রমিকের জন্য সপ্তাহে ৪৮ কর্মঘণ্টা নির্ধারিত হলেও অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা দিয়ে এ ধরনের প্রজ্ঞাপণ জারি করার নিন্দা জানিয়েছে তামাক বিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা।

এক বিবৃতিতে তারা বলছে, শ্রম আইনের ১০২ ধারা অনুযায়ী সপ্তাহে ৪৮ কর্মঘন্টা নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু এই প্রজ্ঞাপনের কারণে বিএটিবি শ্রমিককে সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করাতে বাধ্য করতে পারবে।

১০২ ধারা ছাড়া শ্রম আইনের ১০০, ১০৪, ১০৫ ও ১১৪(১) ধারা থেকে তামাক কোম্পানিটিকে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ থেকে ১৭ মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত এই ছয় মাস সময়ের জন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়।

১০৪ ধারায় অব্যাহতি পাওয়ার ফলে শ্রমিকদেরকে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি (অর্থাৎ কোনো শ্রমিক তাহার প্রাপ্য ছুটি হতে বঞ্চিত হলে উক্তরূপ ছুটির সমসংখ্যক ছুটি) দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকল না বিএটিবির।

এছাড়া শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সপ্তাহে দেড় দিন বন্ধ রাখার বিধান থাকা ১১৪ (১) ধারার প্রতিপালন হতে অব্যাহতি দেওয়ায় প্রত্যেক শ্রমিককে সপ্তাহে মাত্র একদিন ছুটি দেবে তামাক কোম্পানিটি।

একইসঙ্গে আইনের ১০৫ ধারা অনুযায়ী একজন শ্রমিকের কর্মসময়ের সম্প্রসারণ আহার বিশ্রামের ১ ঘণ্টা বিরতিসহ দৈনিক সর্বোচ্চ ১০ ঘন্টার অধিক না হওয়ার বিধানের প্রয়োগ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞা বলছে, অব্যাহতি প্রদানের সময়টা মূলত তামাক চাষ ও তামাক পাতা ক্রয়-বিক্রয়ের মৌসুম। শ্রমিকদেরকে অতিরিক্ত সময় কাজ করানোর জন্যই এই অব্যাহতি আদায় করে নিয়েছে কোম্পানিটি।

তাদের অভিযোগ, শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিলে বছর বছর মোটা অংকের টাকা অনুদান দেওয়া এবং সরকারে একজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বিএটিবির ইনডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কারণেই কোম্পানিটি এমন শ্রমস্বার্থবিরোধী কাজের ক্ষেত্রে অব্যাহতি পেয়েছে।

তামাক কোম্পানিকে এভাবে লাভবান করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন সম্ভব নয় বলেও বিবৃতিতে মন্তব্য করে প্রজ্ঞা।