ইলিশের দাম চড়ছে, কমেছে আদা-পেঁয়াজের

ভরা মওসুমে সরবরাহ বেশির মধ্যেই গেল সপ্তাহের তুলনায় ইলিশের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে আদা ও পেঁয়াজের যে বাড়তি দাম ছিল তা এখন নেই।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2016, 02:53 PM
Updated : 23 Sept 2016, 05:19 PM

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গেল সপ্তাহে ইলিশ অনেক সস্তায় বিক্রি হলেও সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার দাম কিছুটা বেড়েছে।

তারপরেও এটাকে ক্রেতাদের ‘নাগালের মধ্যেই’ বলছেন বিক্রেতারা। প্রজননের মওসুমে ইলিশ ধরা বন্ধ করার আগের এই সময়েই আরও কয়েক দিন দাম সহনীয় থাকবে বলে মনে করছেন তারা।

ইলিশ কিছুটা চড়লেও কমেছে আদা ও পেঁয়াজের দাম। ঈদ সামনে রেখে অনেকটা অসহনীয়ভাবে বেড়েছিল আদার দাম, এখন তা এখন কমে এসেছে। পেঁয়াজের দামও বাজারভেদে ৫ থেকে ১০টা কমেছে।

এছাড়া অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দাম অনেকটা স্থিতিশীল থাকলেও চালের দাম প্রকারভেদে ১ থেকে ৫ টাকা এবং মসুর ডালের দাম কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে।

গত সপ্তাহের চেয়ে শুক্রবার ইলিশের দাম হালি প্রতি ২০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়েছে বলে হাতিরপুল কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা নুর হোসেন লালু জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় এবং এক কেজি ওজনেরগুলো ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে গেল সপ্তাহে ৮০০ গ্রামেরটা ৫০০ থেকে ৫৫০ এবং কেজি ওজনেরটা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

এরপরেও বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় দাম অনেক কম হওয়ায় মানুষ বেশি পরিমাণে কিনে নিয়ে ইলিশ সংরক্ষণ করছে বলে জানান এই বিক্রেতা।

“এখন দাম কম। মানুষ বেশি কইরা নিয়া জমা করতেছে। ২০-২৫-৩০টা করেও কিনতেছে। আরও এক সপ্তাহ দাম কম থাকতে পারে,” বলেন তিনি।

আরেক দোকানি মোহাম্মদ এরশাদ জানান, গত সপ্তাহে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ প্রতি হালি ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। শুক্রবার তা বিক্রি হয়েছে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায়।

“৮০০ গ্রাম ওজনেরগুলোর হালি ২০০০ হাজার থেকে ২২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০০ থেকে ২০০০টাকা পর্যন্ত। এক কেজি ওজনের ইলিশও প্রতিটিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে।”

বিক্রেতারা দাম কমের কথা বললেও তাতে সন্তুষ্ট নন ডা. নাজমুল করিম।

সকালে হাতিরপুর বাজারে মাছ কিনতে এসে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভরা মওসুমে দাম আরও কম থাকার কথা, সে তুলনায় বেশিই। তবুও এখন একটু কম দামেই পাওয়া যাচ্ছে।”

১৩০০ টাকায় তিনটি ইলিশ কেনার কথা জানান নাজমুল।

নিউ মার্কেট কাঁচাবাজারেও ইলিশের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বাড়তি বলে জানান সেখানকার মাছ বিক্রেতা হুমায়ুন কাজী।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি হালিতে ২০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

“৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতি হালি ১২০০ থেকে বেড়ে ১৪০০ টাকা, ৮০০ গ্রামের প্রতি হালি ১৬০০-১৮০০ থেকে ২০০০-২২০০ টাকা এবং এক কেজি ওজনের মাছ প্রতি হালি ৪০০০ হাজার থেকে বেড়ে ৪৫০০-৫০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”

ঈদের আগে পেঁয়াজের দামে যে চড়াভাব ছিল তা এখন আর নেই বলে হাতিরপুল কাঁচাবাজারে ‘ভাই ভাই স্টোর’র দোকানি আমান হোসেন জানান।

তিনি বলেন, ঈদের আগে ৪০ টাকার কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ৩৬ টাকা এবং বিদেশিটা ২৫ টাকা থেকে ২২ টাকায় এসেছে। ঈদের আগে হুট করে আদার দাম ১৪০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল, এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকায়।

দেশি মসুর ডালের দাম কেজি প্রতি ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা হয়েছে বলে জানান আমান।

আলু, মরিচ, ভোজ্যতেলের দাম আগের মতো থাকলেও চালের দাম কেজি প্রতি ১ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানান তিনি।

নিউ মার্কেটের খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ঈদের আগে আদা কেজি প্রতি ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছিলেন, এখন সেটা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দামও ৩৮-৪০ টাকা (দেশি)  থেকে কমে ৩৬ টাকা এবং বিদেশিটা ২২ থেকে ২০ টাকা হয়েছে।

এদিকে টিসিবি জানিয়েছে, আদার পাশাপাশি রসুন ও ব্রয়লার মুরগির দামও গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে।মানভেদে রসুনের দাম এখন প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা, যেটা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ২০০ টাকা।

ব্রয়লার মুরগিরর দামও বাজারভেদে কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে বলে জানিয়েছে টিসিবি।