যমুনা নিয়ে এনবিআরের অভিনব সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপের কাছ থেকে পাওনা রাজস্ব দিয়ে কী কী অবকাঠামো নির্মাণ করা যায়, তার ফিরিস্তি দিয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2016, 03:25 PM
Updated : 23 August 2016, 03:50 PM

মঙ্গলবার পাঠানো অভিনব এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর বলেছে, যমুনা গ্রুপের কাছ থেকে ভ্যাট ও শুল্ক বাবদ বকেয়া রাজস্ব ২১৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করা গেলে প্রতিটি জেলায় ১ হাজার ৬৯০টি কালভার্ট, ১০৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক, ৪৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক উন্নয়ন সম্ভব।

এনবিআরের হিসাবে ২১৬ কোটি টাকায় যা সম্ভব

# ১ লাখ ৮ হাজারটি কালভার্ট নির্মাণ করা যাবে। এই হিসাবে  প্রতিটি জেলায় অন্তত ১ হাজার ৬৯০টি কালভার্ট হয়

# ১০৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করা যায়

# ৪৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা যায়, এই হিসেবে প্রতি জেলায় কমপক্ষে ৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন  সম্ভব

# ৪৩ হাজার ২০০টি মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির মেরামত করা যায়, সে হিসেবে প্রতিটি জেলায় ৬৭৫টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হয়

# ৪ কোটি ৩২ লাখ শিশুকে একবেলা (৫০ টাকার খাবার) মিডডে লাঞ্চ (স্কুল ফিডিং) দেওয়া যায়

# ৭২ লাখ বয়স্ক লোককে এক মাসের বয়স্ক ভাতা দেওয়া যায়, ২ লাখ  মুক্তিযোদ্ধাকে ১০ হাজার টাকা করে এক মাসের ভাতা দেওয়া সম্ভব

# ৪৩ হাজার ২০০ গ্রামীণ শিক্ষিত বেকার যুবক/যুব মহিলাদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থান/স্বনির্ভর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায়

এছাড়া যমুনা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এ্যারোমেটিক কসমেটিকস লিমিটেডের বিরুদ্ধে সুদসহ প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বকেয়া রাজস্ব আদায় করা গেলে উল্লিখিত উন্নয়ন কাজগুলোর তিনগুণ বেশি করা সম্ভব হবে বলে দাবি এনবিআরের।

যমুনা গ্রুপের সঙ্গে বেশ কিছু দিন এনবিআরের রেষারেষি চলছে। এনবিআর চেয়ারম‌্যান নজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘মানহানিকর’ সংবাদ প্রকাশের পর যমুনা গ্রুপের মালিকানাধীন যুগান্তরের বিরুদ্ধে মামলাও হয়।

রেষারেষির মধ‌্যেই মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যমুনা গ্রুপের বকেয়া নিয়ে এই হিসাব দিল এনবিআর।

নুরুল ইসলাম বাবুল (ফাইল ছবি)

এদিকে এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে ‘হাস‌্যকর’ বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইনের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। আমরা আইনের পথে আছি…।”

“এনবিআর যমুনা গ্রুপের কাছ থেকে যে বকেয়ার কথা বলছে সেটা বিচারাধীন রয়েছে। যে রায় আসবে সেটা আমরা মেনে নেব,” বলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাতীয় পার্টির নেত্রী সালমা ইসলামের স্বামী বাবুল।   

এনবিআর বলেছে, এই বকেয়া নিয়ে তারা যমুনা গ্রুপকে একটি চিঠি দিয়ে ‘অত‌্যন্ত আপত্তিকর ও অশালীন’ জবাব পেয়েছে।     

“পত্রটির ভাষা ও বিষয়বস্তু অত্যন্ত আপত্তিকর ও অশালীন, যা ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ বলে প্রতীয়মান হয়।”

বাবুল তার মালিকানাধীন দৈনিক যুগান্তর এবং যমুনা টেলিভিশনকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভাবমূর্তি হেয় করার অপপ্রয়াসে ব‌্যবহার করছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়।

দুই পৃষ্ঠার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর বলেছে, তারা ‘দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন’ নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করছে।