বিপিও সামিটে সম্ভাবনার ‘অনেক দুয়ার’

পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করে কীভাবে কিছু অর্থ উপার্জন করা যায়?

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2016, 02:50 PM
Updated : 29 July 2016, 08:02 PM

এমন জিজ্ঞাসা নিয়ে বাংলাদেশ বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও সম্মেলনের এক স্টল থেকে আরেক স্টলে ঘুরছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইম উদ্দিন। অস্থায়ী চাকরির ‘অনেক সম্ভাবনার’ সন্ধান পেয়ে উচ্ছ্বসিত দেখাচ্ছিল তাকে।

ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে দুই দিনব্যাপী বিপিও সম্মেলনে এসে শুক্রবার কথা হয় নাইমের সঙ্গে।

“সামিটে এসে অনেক কিছু জানা গেল। পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম একটা চাকরি পেয়ে যাব বলে মনে হচ্ছে,” সুখবর দিলেন নাইম।

জানালেন, কল সেন্টার, দেশ-বিদেশি কোম্পানিগুলোর দাপ্তরিক কাজ, আইটি ও সফটওয়্যার সংক্রান্ত অনেক কাজ করার সুযোগ যে তার সামনে রয়েছে, সে ধারণা তিনি পেয়েছেন স্টলগুলো ঘুরে।

আইটি খাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের স্টলে জীবন বৃত্তান্তও (সিভি) জমা দিয়েছেন সাউথ-ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী।

বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বহু শিক্ষার্থীকেই এদিন নাইমের মতো বিপিও সামিটের স্টলে স্টলে আগ্রহ নিয়ে ঘুরতে দেখা গেল।

চট্টগ্রামভিত্তিক আইটি প্রতিষ্ঠান হ্যালো ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেশন্সের হেড অব আইটি শুভ্র জানালেন, তাদের কল সেন্টারগুলোতে পাঁচশর বেশি ছেলেমেয়ে কাজ করে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের বাইরের অন্তত ২০টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেন তারা। দেশের ভেতরেও রয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান।

অনলাইন যোগাযোগের মাধ্যমে হাসপাতাল, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত অন্যান্য অনুসন্ধানের উত্তর দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

দেশে ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও খাতের অবস্থান ও সক্ষমতা তুলে ধরতে ঢাকায় দ্বিতীয়বারের মতো এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার ছিল সম্মেলনের সমাপনী দিন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

সম্মেলনে নারী ও শিশুদের জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সেবা নিয়ে রয়েছে বসেছে একটি স্টল। নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে কলসেন্টারসহ আরও কয়েকটি সেবা রয়েছে এ মন্ত্রণালয়ের।

মন্ত্রণালয়ের প্রোগ্রাম অফিসার ফাহিমা মেহজাবীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, যে কোনো মোবাইল থেকে ১০৯২১ নম্বরে কলে করে নারী ও শিশুরা সমস্যার কথা জানাতে পারেন। আদালত বা পুলিশের সহায়তা প্রয়োজন হলে সে কথাও তারা বলতে পারবেন এখানে।

ওই নম্বরে প্রতিদিন তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ কল আসছে বলে জানান ফাহিমা।

সার্ভিস সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন জানান, তারা আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে দেশীয় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে কল সেন্টার সেবা দিচ্ছেন। গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, সিটিসেলসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন তাদের কর্মীরা।

“বিপিও সামিটে আসা দর্শনার্থীদের কাছ থেকে আমরা জীবন বৃত্তান্ত রাখছি। সময় সুযোগ বুঝে প্রয়োজন মতো তাদের ডাকা হবে। পার্ট টাইম, ফুল টাইম কাজ দেওয়া হবে,” বলেন তিনি।

একই ধরনের সেবা ও কার্যক্রম চালানোর কথা বলেন ‘সার্ভিস ইঞ্জিন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী তাহমিনা বীণা।

মাই আউট সোর্সিংয়ের আসিফ হাসান বলেন, স্কয়ার হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল, আই হসপিটাল ও সিঙ্গার ইলেক্ট্রনিক্সসহ আরও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আইটি খাতে কাজ করেন তাদের কর্মীরা। নিজস্ব অফিসে দিনে-রাতে দুই শতাধিক কর্মী ক্লায়েন্টদের সেবা দেয়।

নতুন কোনো পণ্যের বাজার সৃষ্টি, ভোক্তা ও উদ্যোক্তার মধ্যে সমন্বয়, ফেইসবুকে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনসহ অন্যান্য প্রচারমূলক কাজে সহযোগিতা করে থাকে ইম্পেল সার্ভিস অ্যান্ড সলিউশন। এ কাজে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহার করছে তরুণ ও প্রযুক্তিবান্ধব ছেলে-মেয়েদের।

এছাড়া্ বিপিও সম্মেলনে এসেছে জেনেক্স ইনফোস, ডিজিকন টেকনোলজিসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। কর্মী সংগ্রহ করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দর্শনার্থীদের জানাচ্ছে তারা।

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম ও ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এডিএন টেলিকম লিমিটেড বিপিও সম্মেলন আয়োজনে সহযোগিতা করছে। সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আরও আছে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড, ঢাকা ব্যাংক, বিটিআরসি, এ-টু-আই ও বেসিস।