খরায় বিশ্ববাজারে চালের দাম বাড়ার শঙ্কা

বিশ্বজুড়ে খরার কারণে উৎপাদন কমে কোটি কোটি মানুষের প্রধান খাদ্যপণ্য চালের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2016, 06:18 AM
Updated : 5 May 2016, 07:03 AM

এল নিনোর প্রভাবে তপ্ত আবহাওয়া ও খরায় বিশ্বের প্রায় ৬০ ভাগ চাল উৎপাদনকারী দেশ ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে যুক্তরাজ্যের দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়, এই দেশগুলোর শস্যভাণ্ডারের মজুদ দ্রুত কমছে, যা বছরের শেষে ১৯ মিলিয়ন টনে নেমে আসতে পারে। ২০১৩ সালে গড়ে এই মজুত ছিল প্রায় ৪৩ মিলিয়ন টন।

আন্তর্জাতিক চাল গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইআরআরআই-ইরি) ড. সমরেন্দু মোহান্তে বলেন, চালের সরবরাহে যে টান পড়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটা অবশ্যই চাহিদা বাড়াবে।

“আসছে বর্ষায় কী ঘটে, তার উপর নির্ভর করবে এই সঙ্কট বাড়বে কি না। যদি ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় মওসুম (বর্ষা) খারাপ যায় এবং ধান চাষের সময়ে বৃষ্টি না হয়, তাহলে বাস্তবিকই সামনে বড় সমস্যা হতে পারে।”

ভারতে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকাল স্থায়ী হয়। এই সময়ে দেশটিতে সারা বছরের চার ভাগের একভাগ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।

বৈশ্বিক জলবায়ুর বড় পরিবর্তন ঘটাচ্ছে এল নিনো, যাতে সাধারণত প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতি দুই থেকে সাত বছরে সমুদ্র-পৃষ্ঠের উষ্ণায়ন ঘটে থাকে। এর প্রভাবে বেড়ে যায় বিশ্বের তাপমাত্রাও।

এর আগে এল নিনোর প্রভাবে এশিয়ায় চাল উৎপাদন কমে যাওয়ায় ২০০৮ সালে ভারত চাল রপ্তানি সাময়িক বন্ধ রাখায় বিশ্ব বাজারে প্রতি টন চালের মূল্য দাঁড়িয়েছিল প্রায় ১০০০ ডলারে।

ইরির সমরেন্দু বলেন, “এবার পরিস্থিতি ২০০৮ সালের মতো জটিল হবে বলে এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে না। ওই সময় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো অবশ্যই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে বিড়ম্বনা এড়াতে চাইবে।”

ইন্ডিপেনডেন্ট বলেছে, গত মাসে বিশ্ববাজারে টনপ্রতি চালের জন্য গুনতে হয়েছে প্রায় ৩৯০ ডলার, যা গত বছরের জুলাই থেকে সর্বোচ্চ।

থাইল্যান্ডের প্রধান শস্য ধানের উৎপাদন ২০১৩ সালের সর্বোচ্চ উৎপাদনের তুলনায় এবার প্রায় অর্ধেক কমে ১৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন টনে নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর মধ্যে ভিয়েতনামের মেকং ডেলটা অঞ্চলে সাম্প্রতিক খরা ও লবণাক্ততায় প্রায় পাঁচ লাখ ৯০ হাজার একর ধানি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

১৯৬০ সাল থেকে সেচের জন্য প্রায় ১০ লাখ কূপ খনন করা হলেও তাতে সমস্যা কমেনি; লবণাক্ততা বেড়ে শস্য উৎপাদন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

মজুত বাড়িয়ে ভবিষ্যতের সঙ্কট এড়াতে ফিলিপিন্স প্রায় অতিরিক্ত পাঁচ লাখ টন চাল আমদানির চিন্তা করছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।