নিরীক্ষা কোম্পানি তোহা জামান অ্যান্ড কোম্পানি বিটিআরসির নিয়োগ পাওয়ার তিন মাস পার হয়ে গেলেও গ্রামীণফোনের অসহযোগিতার জন্য নিরীক্ষা শুরু করতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছে।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গ্রামীণফোনকে দেওয়া চিঠিতে বিটিআরসি বলেছে, নিরীক্ষায় সহযোগিতায় না করা লাইসেন্সের শর্তবিরোধী।
গ্রামীণফোনকে এবিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করতে বলা হয় চিঠিতে।
গত বছর অক্টোবরে নতুনভাবে নিরীক্ষা (ইনফরমেশন সিস্টেম অডিট) করার জন্য এই প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ দেয় বিটিআরসি।
চুক্তি অনুযায়ী, গ্রামীণফোনের ব্যবসা শুরুর পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান বিটিআরসির নথির সঙ্গে অপারেটরদের আমদানি যন্ত্রপাতির দাম যাচাই করে দেখবে।
এছাড়া অপারেটরের দেওয়া প্রকৃত রাজস্বের হিসাব ঠিক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখবে বিটিআরসি ও এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা। অপারেটরদের আর্থিক প্রতিবেদন যাচাই ও নিরীক্ষা আওতায় থাকবে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহাজাহান মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গ্রামীণফোনের নিরীক্ষায় সহযোগিতা না করায় বিটিআরসির অসন্তোষ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর পরও যদি তারা নিরীক্ষায় সহযোগিতা না করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
“নিরীক্ষার বিপক্ষে আমরা নই, বিটিআরসি ওই চিঠির বিষয়ে আমাদের জবাব দিলে পরবর্তী পদক্ষেপে আমরা যাব।”
এবিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, “মনে রাখতে হবে, এটি রি-অডিট নয়, সম্পূর্ণ নতুনভাবে অডিট করা হচ্ছে। তাই আগের বিষয়গুলো এখানে আসছে না ।”
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “স্টেপটা আমরাই নিয়েছি। অডিট টিম আমাদেরও জানাবে। বিটিআরসি যদি ফেইল করে, অবশ্যই আমাদের বলবে। শুধু গ্রামীণফোন না, যে অফিসেই অডিটে যায় সে অফিসই এ রকম করে।”
২০১১ সালের নিরীক্ষায় গ্রামীণফোনের কাছে ৩ হাজার ৩৪ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।
আগের নিরীক্ষা বাতিল হবে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, “দেখি বিটিআরসি কী মতামত দেয়। বিটিআরসিকে স্পেসেফিকভাবে জানাতে হবে।
“সব অপারেটরের অডিট করতে হবে, আমাদের শত্রু-মিত্র বলে কিছু নেই, সব সমান।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “একজন আইনজীবী হিসেবে বলতে চাই আদালত যদি কারও নিয়োগ বাতিল করে তাহলে তার যেটি প্রডাক্ট তাও বাতিল হয়ে যায়। তবে আবারও বলছি, এটি আমি আইনজীবী হিসেবে বলছি, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে এখানে আমি চুপ।”
২০১১ সালে দেশীয় প্রতিষ্ঠান দিয়ে হিসাব নিরীক্ষা করায় মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো নিরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে গেলে নিরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।
ওই বছরের ৩ অক্টোবর দেশীয় একটি কোম্পানি নিরীক্ষা করার পর গ্রামীণফোনের কাছে তিন হাজার ৩৪ কোটি টাকা চেয়ে চিঠি দেয় বিটিআরসি।
গ্রামীণফোন দেশীয় ওই নিরীক্ষার ভিত্তি নিয়েই প্রশ্ন তোলে। এরপর ওই চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করতে প্রতিষ্ঠানটি আদালতে আবেদন করে।
২০ অক্টোবর গ্রামীণফোনকে দেওয়া বিটিআরসির চিঠির ওপর ‘স্থিতাবস্থা’ দেয় হাই কোর্ট।