থাইল্যান্ডে সরাসরি জাহাজ চলাচলে উদ্যোগ

বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলে একটি সমঝোতা স্মারক সই করবে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2016, 09:40 AM
Updated : 9 Feb 2016, 09:40 AM

নৌযান চলাচলে এই চুক্তি হওয়ার পর এই রুটে জাহাজ চলাচলের সময় সাত দিন থেকে তিন দিনে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন নৌসচিব অশোক মাধব রায়।

সচিবালয়ে মঙ্গলবার থাইল্যান্ড বন্দর কর্তৃপক্ষ ও দেশটির ব্যবসায়ীদের ১৩ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা বলে তিনি।

বর্তমানে ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ট্রান্সশিপমেন্টের (কোনো দেশ থেকে পণ্য পরিবহনে তৃতীয় কোনো দেশের পরিবহন ব্যবস্থা ব্যবহার) মাধ্যমে জাহাজে করে বাংলাদেশ থেকে থাইলান্ডে পণ্য পরিবহন করা হয়।

বাংলাদেশের নৌবন্দর সম্পর্কে প্রতিনিধি দলকে ধারণা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে নৌসচিব বলেন, কিভাবে বন্দরে কাজ হয়, কাস্টমস কিভাবে কাজ করে তা দেখতে বুধবার তারা চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করবেন।

“এরপর উভয় দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হবে।… প্রথম দফায় চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে থাইল্যান্ডের র‌্যানং বন্দরের সঙ্গে চুক্তি হতে পারে।”

অশোক বলেন, “সরকারের অনুমোদন নিয়ে নৌযান চলাচল বিষয়ে থাইল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি হবে। ওই চুক্তি হলে রুট কমে যাবে। সময় এবং রুট কমে গেলে ট্যাক্সেশন কমে যাবে।”

থাইল্যান্ডের যেসব জায়গা থেকে বাংলাদেশে মালামাল আসে সেসব পোর্টের সঙ্গে চুক্তি করা হবে বলেও জানান তিনি।

“থাইল্যান্ডের সঙ্গে এখনও পণ্য পরিবহন হচ্ছে।এটাকে সহজীকরণের জন্য সমঝোতা স্মারক সই করা হবে।”

বৈঠকে অংশ নিয়ে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম জানান, থাই প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনের পর চট্টগ্রাম বন্দরের লোকজনও থাইল্যান্ডে বন্দর দেখতে যাবেন। এরপর চুক্তির চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।

“দুই দেশের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলারের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য হচ্ছে। এই ট্রেড ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ট্রান্সশিপমেন্ট করে হচ্ছে। আমরা এটাকে আরও সরাসরি করার চিন্তা করছি।

“এতে থাইল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর আরও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।”

বাংলাদেশের সঙ্গে থাইল্যান্ড, মিয়ানমার বা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কোনো ‘কোস্টাল শিপিং এগ্রিমেন্ট’ নেই জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে কোস্টাল শিপিং চুক্তি করা হয়েছে। একই মডেলেই থাইল্যান্ডের সঙ্গেও চুক্তি করে কিভাবে কানেকটিভিটি আরও বাড়ানো যায় সে বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।”

গত ২৫ জুন ঢাকায় থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে সভায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এই ‘শিপিং কানেকশনের’ প্রস্তাব দিলে থাই পররাষ্ট্র সচিব তাতে সম্মতি দেন বলেও জানান মুনা তাসলিম।

তিনি বলেন, থাইল্যান্ডের সঙ্গে নৌযান চলাচলে চুক্তি হলে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বাড়বে।

আগামী মে মাসে ব্যাংককে ‘ট্রেডিং ইনভেস্টমেন্ট এক্সপো’ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

থাইল্যান্ডের পোর্ট অথরিটির সহকারী মহাপরিচালক প্রজাক শ্রীভাথানা প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দিচ্ছেন। থাইল্যান্ডের র‌্যানং প্রদেশের গভর্নর সরাইয়ান কানজানাসিল্পও এই দলে রয়েছেন।

নৌ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ছাড়াও বাংলাদেশের শিপিং মালিকরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।