ডেটা বাণিজ্যে ভর করে আয় বেড়েছে গ্রামীণফোনের

ইন্টারনেট ডেটার ব্যবহারে প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে গত বছর গ্রামীণফোনের লিমিটেডের আয় আগের বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেড়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2016, 11:59 AM
Updated : 8 Feb 2016, 04:11 PM

২০১৫ সালে টেলিযোগাযোগ খাতের এই কোম্পানি ১০ হাজার ৪৮০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করেছে, যা আগের বছর ছিল ১০ হাজার ২৭০ কোটি টাকা।

সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন গ্রামীণফোনের সিইও রাজিব শেঠি।

তিনি বলেন, “গত বছরের শুরুটা কঠিন হলেও গ্রামীণফোন ব্যবসায়িক সাফল্য অব্যহত রাখতে সক্ষম হয়েছে। ডেটা ছিল প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি।

“ভবিষ্যতে গ্রাহকের জীবনে ডিজিটাল পার্টনার হিসেবে অবস্থান নিয়ে প্রবৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজনের লক্ষ্য আমরা স্থির করেছি।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছর ডেটা গ্রাহকের সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বেড়ে এক কোটি ৫৭ লাখ হয়েছে এবং ডেটা ব্যবহারের পরিমাণও গত বছরের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।

আগের বছরের তুলনায় নতুন গ্রাহক ও সেবা থেকে অর্জিত রাজস্ব (আন্তঃসংযোগ আয় ছাড়া) বেড়েছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং সেসঙ্গে গ্রাহকদের ব্যবহার্য ডিভাইস ও অন্যান্য রাজস্ব বেড়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।

ডেটা রাজস্ব ৬৬ শতাংশ ও মূল্য সংযোজিত সেবায় রাজস্ব ৩১ শতাংশ বাড়ায় এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

তবে গত বছরের তুলনায় গ্রামীণফোনের কর পরিশোধপরবর্তী মুনাফা কমেছে।

আয়কর দেওয়ার পর ২০১৫ সালে কোম্পানির মুনাফা হয়েছে একহাজার ৯৭০ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল একহাজার ৯৮০ কোটি টাকা।

২০১৫ সালে কর, ভ্যাট, শুল্ক ও লাইসেন্স ফি হিসেবে সরকারি কোষাগারে পাঁচ হাজার ১১০ কোটি টাকা দিয়েছে গ্রামীণফোন, যা কোম্পানির মোট রাজস্ব আয়ের ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত বছর গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যায় ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যার ফলে মোবাইল ফোন সিমের বাজারে কোম্পানির শেয়ার দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ৪ শতাংশে। ৫২ লাখ নতুন গ্রাহক যোগ হওয়ায় বছর শেষে গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৬৭ লাখে।

২০১৫ সালে থ্রি-জি নেটওয়ার্ক স্থাপন, টু-জি নেটওয়ার্কের মানোন্নয়ন এবং আইটি অবকাঠামোর দক্ষতা বৃদ্ধিতে গ্রামীণফোন ১৯৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।

রোববার অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রামীণফোন ২০১৫ সালের জন্য পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ (প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারের জন্য ৬ টাকা) চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

এর ফলে গত বছরের জন্য মোট নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পরিশোধিত মূলধনের ১৪০ শতাংশ (এর মধ্যে রয়েছে ৮০ শতাংশ অন্তবর্তী নগদ লভ্যাংশ), যা ২০১৫ সালের কর পরবর্তী মুনাফার ৯৬ শতাংশ।

২৯ ফেব্রুয়ারি রেকর্ড তারিখ পর্যন্ত যারা শেয়ারহোল্ডার থাকবেন তারা এই লভ্যাংশ পাবেন। ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডাররা তা অনুমোদন করবেন।

এক নজরে গ্রামীণফোনের ২০১৫ সাল

• ১০ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা আয়, বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ

• গ্রাহকসংখ্যা ৫ কোটি ৬৭ লাখ, মার্কেট শেয়ার ৪২ দশমিক ৪ শতাংশ

• ট্যাক্স দেওয়ার প্রদানের পর নিট মুনাফা ১৮.৮% মার্জিনসহ ১৯৭০ কোটি টাকা এবং ইপিএস ১৪ দশমিক ৫৯ টাকা

• থ্রি-জি নেটওয়ার্ক স্থাপনে এবং টু-জি নেটওয়ার্কের ধারণক্ষমতা ও সক্ষমতা উন্নয়নে বিনিয়োগ একহাজার ৯৩০ কোটি টাকা

• পরিশোধিত মূলধনের ৬০% শতাংশ চূড়ান্ত মূনাফা ঘোষণা