আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি এই শুনানি হবে বলে রোববার বিটিআরসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক এস এম গোলাম সারোয়ার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, রবি ও এয়ারটেলের একীভূতের আবেদন নিষ্পত্তিতে সংশ্লিষ্ট সরকারি, আধাসরকারি, সায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা, টেলিযোগাযোগ সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, ভোক্তা সংঘ, পেশাজীবীসহ আগ্রহীদের জন্য আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি গণশুনানির আয়োজন করা হয়েছে।
শুনানিতে অংশ নিতে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিটিআরসির ওয়েবসাইট (www.btrc.gov.bd) থেকে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে অনলাইনের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে।
নিবন্ধিতদের মধ্য থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে নির্বাচিতদের ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে গণশুনানির স্থান ও সময় জানানো হবে।
দুই কোম্পানির ব্যবসা একীভূতের বিষয়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য থাকলে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা বিটিআরসির চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে পাঠানোরও অনুরোধ করা হয়েছে।
রবি ও এয়ারটেলের ব্যবসা একীভূত করতে গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর রবি আজিয়াটা লিমিটেড জানিয়েছে, একীভূত কোম্পানি রবি নামেই ব্যবসা চালাবে।
এই দুই কোম্পানি এক হলে তাদের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় চার কোটি, যা বাংলাদেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক-চতুর্থাংশ। পাঁচ কোটি গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোন আছে সবার উপরে।
গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর দুই কোম্পানি থেকে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম একীভূত করার সম্ভাবনার বিষয়ে একান্ত আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
এশিয়ার বড় টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজিয়াটা অন্যতম। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের পাশাপাশি ক্যাম্বোডিয়া, ভারত ও সিঙ্গাপুরেও তাদের ব্যবসা রয়েছে।
২০১৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মূলধনী ব্যয়ে ৭১০ কোটি টাকা বিনিয়োগসহ এ পর্যন্ত বাংলাদেশে রবির মোট মূলধনী ব্যয়ের পরিমাণ ১৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা।
দেশজুড়ে ৮ হাজার ১১৯টি সাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবা দিচ্ছে রবি, যার মধ্যে ৩.৫জি সাইটের সংখ্যা ২ হাজার ৪৫০টির বেশি।
মালয়েশিয়ায় ‘সেলকম’, ইন্দোনেশিয়ায় ‘এক্স এল’, শ্রীলঙ্কায় ‘ডায়লগ’, বাংলাদেশে ‘রবি’, ক্যাম্বোডিয়ায় ‘স্মার্ট’, ভারতে ‘আইডিয়া’ ও সিঙ্গাপুরে ‘এমওয়ান’ ব্র্যান্ড হিসেবে কাজ চালায় আজিয়াটা।
এশিয়াতে আজিয়াটা গ্রুপ এবং এর সহযোগী ও সহায়ক প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহীতার সংখ্যা ২৬ কোটির বেশি। ২০১৪ সালে গ্রুপটির আয় ছিল ১৮ দশমিক ৭ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত।
বাংলাদেশে ভারতি এয়ারটেলের বিনিয়োগ শুরু হয় ২০১০ সালে। তখন ওয়ারিদ টেলিকমের ৭০ শতাংশ শেয়ার কিনেছিল তারা। তিন বছর পর ওয়ারিদের কাছে থাকা বাকি ৩০ শতাংশ শেয়ারও কিনে নেয় সিঙ্গাপুরে ভারতি এয়ারটেলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভারতি এয়ারটেল হোল্ডিংস লিমিটেড।
বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়াতে তারা আশাবাদী হলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। বর্তমানে ৬টি মোবাইল ফোন অপারেটরের মধ্যে গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকে এয়ারটেল চতুর্থ।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির হিসাবে গত ডিসেম্বর শেষ নাগাদ বাংলাদেশে মোট মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ৩৭ লাখ। এ সময়ে অপারেটর রবির গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৮৩ লাখ এবং এয়ারটেলের ১ কোটি ৭১ হাজার।