দুর্নীতি কমাতে হাতিয়ার তথ্য-প্রযুক্তি: মুহিত

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মনে করেন, দুর্নীতি কমানোর একটি হাতিয়ার হতে পারে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2015, 09:10 AM
Updated : 1 Dec 2015, 11:31 AM

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘১১তম গভর্মেন্ট ডিসকাশন ফোরাম ফর ইলেকট্রনিক আইডেনটিটি-২০১৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারলে দুর্নীতি অনেক কমে আসবে। এটা দুর্নীতি কমানোর একটি হাতিয়ার হতে পারে।”

এসময় নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মুহিত বলেন, “আমি একটি নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে ছিলাম। অনেক শিক্ষার্থী আছে সেখানে।

“কিন্তু শিক্ষকদের বেতন দিতে পারে না। এরপর ভর্তি প্রক্রিয়া ডিজিটাল করে দিলাম। ভর্তি বাবদ ওই প্রতিষ্ঠানের আয় ৮০ হাজার থেকে ৮ লাখে চলে গেল।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা সম্প্রতি আইসিটি যুগে প্রবেশ করেছি। আমাদের একটু দেরি হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ডিজিটাল কার্যক্রমের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে অনেক ক্ষেত্রে সফলতাও এসেছে।

“বিশেষ করে লেনদেন প্রক্রিয়া অনেক এগিয়েছে। ব্যাংকিং, মোবাইল ফিনানশিয়াল সার্ভিস, আয়কর পরিশোধ, রিটার্ন দাখিল, অ্যাডমিশন ফিস, টেন্ডার ফিস ইত্যাদিতে আমরা অনেক এগিয়েছি। অন্যান্য খাতেও অগ্রগতি হচ্ছে।” 

সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ ও এশিয়া প্যাসিফিক স্মার্ট কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (এপিএসসিএ) যৌথভাবে এ ফোরামের আয়োজন করেছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কোন প্রেক্ষিতে কীভাবে স্মার্ট আইডি কার্ড ব্যবহার করছে ও নাগরিকদের সরকারি-বেসরকারি সেবা নিশ্চিত করছে এবং বাংলাদেশ কীভাবে নাগরিকদের ওইসব সেবা দিতে পারে- সেসব বিষয়ে ধারণা নেওয়া এবং আলোচনার লক্ষ্যে এই ফোরামের আয়োজন করা হয়েছে।

সরকার নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে দেশের ৯ কোটি ৬২ লাখ জাতীয় পরিচয়পত্রকে স্মার্ট এনআইডিতে রূপান্তরের কাজ হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের কার‌্যক্রম শুরু হয়েছে। 

দুই দিনের এই ফোরামে আটটি সেমিনার হবে। বাংলাদেশের জন্য দুইটিসহ মোট ২৭টি টেকনিক্যাল সেশন হবে।

এসব সেমিনার ও সেশনে বিভিন্ন দেশের স্মার্ট আইডি কার্ড বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখবেন।

আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডাক ও টেলিয়োগাযোগ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ, এপিএসসিএ চেয়ারম্যান গ্রেগ পোট প্রমুখ।

তথ্য-প্রযুক্তি বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে- একথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, অনেক ক্ষেত্রে খরচ কমানোর পাশাপাশি দক্ষতাও বাড়াচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তি।

 “২০০৮ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র করার কাজ হাতে নেওয়া হয়। যেটাকে এখন স্মার্ট আইডি কার্ড করা হচ্ছে। এসব কার্ডে নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ২৫টি তথ্য থাকবে। এই কার্ড হবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও কমপ্লায়েন্স।

“এতে নাগরিকদের সেবা দেওয়া যেমন সহজ হবে, তেমনি জবাবদিহিতা ও কার‌্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে।”

মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধন ঠিকভাবে না হওয়ায় অনেকে ‘খারাপ কাজ’ করেছে- জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, “এনআইডি নিয়েও জালিয়াতি হয়েছে। স্মার্ট কার্ড হয়ে গেলে এসব হবে না বলে আশা করতে পারি।”