গ্রাহক ও রাজস্ব আয় বেড়েছে রবির

মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের রাজস্ব আয় ও গ্রাহক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সুপুন বীরাসিংহে। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2015, 04:22 PM
Updated : 29 Nov 2015, 05:10 PM

রোববার গুলশানের করপোরেট অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ব্যবসায়িক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি।

সুপুন বলেন, ২০১৫ সালের প্রথম নয় মাসে রবিতে ৩১ লাখ নতুন গ্রাহক যোগ হয়েছে। এতে রবির মোট গ্রাহকসংখ্যা দুই কোটি ৮৪ লাখে পৌঁছেছে। এটি দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ২১ দশমিক ৬ শতাংশ।

২০১৫ মালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে আগের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি। এর মধ্যে ডেটা থেকে রাজস্ব ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে বলে জানান তিনি।

রবির নির্বাহী বলেন, “গ্রাহকের জন্য উদ্ভাবনী অফার ও ৩.৫জি নেটওয়ার্ক বিস্তারে ক্রমাগত বিনিয়োগের ফলে ডাটার ব্যবহার এবং এইখাত থেকে রাজস্ব আয় বেড়েছে।”

এর নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও গুণগত মান সম্পন্ন সেবা দেওয়ার জন্য রবি বিনিয়োগও বাড়িয়েছে বলে জানান তিনি।

রবি-এয়ারটেল একীভূত হলে গ্রাহকরা কি ধরণের সুবিধা পাবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সুপুন বলেন, একীভূত হলে নেটওয়ার্ক আরো সম্প্রসারিত হবে এবং গ্রাহকদের মানসম্মত সেবা (কোয়ালিটি অব সার্ভিস) দেওয়া সম্ভব হবে।

ব্যবসা একীভূত করার অনুমতি চেয়ে গত সেপ্টেম্বরে বিটিআরসিতে চিঠি দেয় রবি ও এয়ারটেল।

কবে নাগাদ দুই অপারেটর একীভূত হচ্ছে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সুপন বলেন, “আগামী তিন মাসের মধ্যে একীভূত প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি হবে। তবে সম্পূর্ণ একীভূত হতে নেটওয়ার্ক ও গ্রাহক একীভূত করতে হবে। এজন্য কমপক্ষে ১২ মাস সময় লাগতে পারে।”

ফেইসবুকসহ অন্যান্য কিছু সোসাল মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় ৩০ শতাংশ ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার কমেছে রবির। এজন্য দুই থেকে তিন শতাংশ রাজস্ব কমে যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

গত ১৮ নভেম্বর থেকে ফেইসবুকসহ কয়েকটি যোগাযোগ অ্যাপ বন্ধ রয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নেটওয়ার্ক বিস্তারে ক্রমাগত বিনিয়োগ এবং পণ্য ও সেবার মূল্য নিয়ে কঠোর প্রতিযোগিতার কারণে প্রথম নয় মাসে পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ।

২.৫জি/৩.৫জি নেটওয়ার্ক বিস্তারে বিনিয়োগের কারণে করপরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা কম।

গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিক থেকে এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত গ্রাহক ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ কোটি ৮৪ লাখে পৌঁছেছে।

উল্লেখযোগ্য গ্রাহক বৃদ্ধির পেছনে রবির গ্রাহক-বান্ধব পণ্য ও সেবা প্রদান এবং শক্তিশালী নেটওয়ার্কের ভূমিকা রয়েছে বলে জানান রবির সিইও।

২০১৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে রবির রাজস্ব ছিল ১ হাজার ২১০ কোটি টাকা, ২০১৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে তা ১০ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে একহাজার ৩৪০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে।

বাজারে তুমুল প্রতিযোগিতা ও ওভার-দ্য-টপ (ওটিটি) সেবার মাধ্যমে ভয়েসের ক্ষেত্রে বিকল্প সেবার ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে রবিসহ টেলিযোগাযোগ শিল্পে এ সেবা থেকে রাজস্বের পরিমাণ কমেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

২০১৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ৩২০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে রবি, যা মোট রাজস্বের ২৪ শতাংশ।

১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে মোট ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বেশি জমা দিয়েছে। অন্যদিকে একই সময়ে শেয়ারহোল্ডারদের মাত্র ২৯০ কোটি টাকা লভ্যাংশ দিয়েছে।

এ সময় রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড পিপল অফিসার মতিউল ইসলাম নওশাদ, কমিউনিকেশনস ও করপোরেট রেসপনসিবিলিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকরাম কবিরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।