ঢাকা সফররত চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের উদ্দেশ্যে বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
কয়েক মাস আগে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশের কাতারে আসা বাংলাদেশ এখন উচ্চ মধ্য আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “এজন্য আমাদের বিপুল বিনিয়োগ দরকার। আমাদের ১৬ কোটি মানুষ রয়েছে। এ মানুষই আমাদের সম্পদ।
“এখন আমাদের পপুলেশন ডিভিডেন্ট (কর্মক্ষম মানুষের হার বেশি) চলছে এবং আগামী ২০৩৭ সাল পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে দেশীয় উৎপাদনের ভোক্তা বানাতে পারলে আমরা উন্নত দেশে পরিণত হব। তাই এদেশের জনগণকে ভোক্তা বানানোর জন্য আপনারা এখানে বিনিয়োগ করুন।”
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে চায়না ঝেজিয়াং-বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মুস্তফা কামাল।
চীনের ওই প্রদেশের ৫৪টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ১২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ঢাকা এসেছেন।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন শীর্ষ এফবিসিসিআই ও চায়না কাউন্সিল ফর প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (সিসিপিআইটি) যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে বিদেশি ঋণের চেয়ে বিনিয়োগই বেশি প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারের সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সরকার আপনাদের ব্যবসার জন্য যে জমি প্রদান করবে তা আপনাদের হয়ে যাবে। একইসঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য নানা ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। এসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন।”
সম্মেলনে বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান সামাদ বলেন, “আমাদের বিনিয়োগ ঘাটতি আছে। বর্তমানে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ২৪ শতাংশ বিনিয়োগ হচ্ছে। এটাকে ৩২ শতাংশে উন্নীত করা আমাদের টার্গেট।”
“বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার নগদ প্রণোদনা, বন্ডেডওয়্যার হাউজসহ আরও অনেক ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।”
বাংলাদেশে কৃষি, খাদ্য, টেক্সটাইল ও চামড়াসহ অনেক খাতে ‘ব্যাপকভাবে’ বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।
বর্তমানে বিনিয়োগ রেজিস্ট্রেশনসহ সব সেবা অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, “বর্তমানে আমাদের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। বাংলাদেশে তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ব্যবসার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
“আগামী ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার টার্গেট নিয়ে কাজ চলছে। এ খাতেও আপনারা বিনিয়োগ করতে পারেন।”
নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর বর্তমানে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে সে খাতেও বিনিয়োগ করার জন্য চীনা ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমদ বলেন, “বিনিয়োগকারীদের এতো বড় দল এর আগে কখনো দেশে আসেনি। এখন আমরা তাদের কাছ থেকে কতটা বিনিয়োগ আদায় করতে পারি তা সরকারের সুযোগ-সুবিধার ওপর নির্ভর করছে।”