টিকফা বৈঠকে টিপিপি নিয়ে উদ্বেগ জানাল বাংলাদেশ

ওয়াশিংটনে টিকফা বৈঠকে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১১টি দেশকে নিয়ে  যুক্তরাষ্ট্রের ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তি নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ তুলে ধরেছে বাংলাদেশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2015, 05:18 PM
Updated : 24 Nov 2015, 06:05 PM

সোমবার দ্বিতীয় টিকফা বৈঠকে টিটিপির কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের সমূহ ক্ষতির আশঙ্কা থেকে এই উদ্বেগ জানানো হয় বলে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ব্রুনাই, কানাডা, চিলি, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম টিপিপি চুক্তি সই করে।

এই চুক্তির ফলে বিশ্ববাণিজ্যের ৪০ শতাংশের নিয়ন্ত্রক এই দেশগুলো দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিনাশুল্ক সুবিধা পাবে।

এ চুক্তির ফলে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিনা শুল্কে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারবে, যেখানে বাংলাদেশকে একই পণ্যের জন্য প্রায় ১৬ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়।

ফলে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের যুক্তরাষ্ট্রের বাজার হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশি পণ্যে জিএসপি সুবিধা বন্ধের মধ্যে নতুন হুমকির বিষয়টি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা কাঠামো (টিকফা) চুক্তি বাস্তবায়নের বৈঠকে তুলে ধরা হয় ঢাকার পক্ষ থেকে।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র মিশনের উপপ্রধান ডেভিড মেলে আগে বলেছিলেন, যদি বাংলাদেশ টিপিপির মান অর্জন করতে পারে, তবে এক সময় তারাও এই জোটে যোগ দিতে চাইবে। 

ওয়াশিংটনে টিকফা বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্বে ছিলেন ইউএসটিআরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক প্রধান মাইকেল ডেলানে।

বাংলাদেশে কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ থেকে জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। টিকফা বৈঠকে শ্রমিকদের অবস্থাসহ বাণিজ্যের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। 

ঢাকার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের শিল্প-কারখানার কর্মপরিবেশের উন্নয়নে সরকারের নেওয়ার বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং এর অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরেন।

দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে ওয়াশিংটন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসবেন বলে আশাও প্রকাশ করেছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার বালি সম্মেলনের ঘোষণা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি পণ্যের বিনা কোটা ও বিনা শুল্কে প্রবেশের উদ্যোগ নিতে আহ্বানও জানানো হয়।

ওয়াশিংটনের বৈঠকে আগামী বছর ঢাকায় টিকফা বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র টিফকা চুক্তিতে সই করে। দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য গতিশীলে বাধাগুলো চিহ্নিত করে দূর করার লক্ষ্যে প্রতি বছর একবার বৈঠক হবে। এর প্রথম বৈঠকটি ঢাকায় হয়েছিল গত বছর।