অবকাঠামো হয়নি বিলোনিয়া বন্দরের

ফেনীর বিলোনিয়া শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে রূপান্তরিত করার ছয় বছরেও বন্দরের কোনো অবকাঠামো তৈরি হয়নি। নিয়োগ দেওয়া হয়নি বন্দরের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী।

নাজমুল হক শামীমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2015, 10:33 AM
Updated : 13 Oct 2015, 10:33 AM

সোমবার সরজমিনে ঘুরে এবং শুল্ক কর্মকর্তা-কর্মচারী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

চার জন শুল্ক কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে বন্দরের কাজ চলছে বলে জানান শুল্ক স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রীতিময় কান্তি বড়ুয়া।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০০৯ সালে এই শুল্ক স্টেশনকে বন্দরে রূপান্তরিত করা হলেও কোনো বন্দর কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

গত ৬ অক্টোবর এই বন্দরে গিয়ে দুজনকে কাজ করতে দেখা গেছে।

এমনটা প্রায়ই হয় বলে জানিয়ে প্রীতিময় কান্তি বড়ুয়া বলেন, “এই বন্দরের নিজস্ব ভবন বা গুদাম, ট্রাকইয়ার্ড, কন্টেইনার টার্মিনাল, রাসায়নিক পরীক্ষাগার, স্টাফ কোয়ার্টার, নিরাপত্তারক্ষীদের ডরমেটরির মতো গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থাপনা নেই। এখনও আগের সেই সংকীর্ণ সড়ক পথেই চলছে পণ্য পরিবহনের কাজ।”

সব উন্নয়ন প্রকল্প উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের বিষয়। এখানকার সামগ্রিক অবস্থা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিলোনিয়া স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কাগজেকলমে এটি বন্দর হলেও এখনও শুল্ক স্টেশনই রয়ে গেছে।

“বন্দর এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শাখা বা বুথ নেই। এ কাজের জন্য প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ফেনী শহরে যেতে হয়। একই সঙ্গে বন্দরে গুদাম ও পরীক্ষাগার না থাকায় আমদানি-রপ্তানিতে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়ছি।”

বন্দরের লোডিং-আনলোডিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ভূঁঞা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রপ্তানি প্রক্রিয়া সম্পাদন করতে অনেক সময় ট্রাকগুলোকে তিন-চার দিনও বন্দরে থাকতে হয়।

“ট্রাক শ্রমিকদের থাকা-খাওয়ার জন্য এখানে কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তারা আসতে চায় না। এ কারণে রপ্তানি কমে যাচ্ছে।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ২০১০-১১ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।

প্রীতিময় বড়ুয়া জানান, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৯০ কোটি ২৫ লাখ, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৫৭ কোটি ৪৮ লাখ, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৫০ কোটি ১৩ লাখ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৪১ কোটি ৭৩ লাখ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রায় ৪৬ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে শুধু শুঁটকি ও টুপির একটি চালান আমদানি হয়েছে বলে জানান প্রীতিময়।

বিলোনিয়া সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ২০০৯ সালে স্থলবন্দরটি চালু হলে এখান দিয়ে ইট, পাথর, সিমেন্ট, রড, চুন, ফার্নিচার, খৈল, পিভিসি ডোর/শিট, স্টিল শিট প্রভৃতি রপ্তানি শুরু হলেও দিন দিন তা কমে যাচ্ছে।

শুরুতে এই বন্দর দিয়ে দৈনিক ৪০-৫০ ট্রাক সিমেন্ট রপ্তানি হলেও এখন তা পাঁচ-ছয় ট্রাকে নেমে এসেছে বলে জানান ওই ব্যবসায়ীরা।