শুক্রবার বিশ্ব ডিম দিবসে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিমের পুষ্টিগুণ নিয়ে আলোচনার মধ্যে এই দাবিও উঠে আসে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এ এস মাহফুজুল বারী বলেন, ভিটামিন ‘সি’ ছাড়া আমিষ ও পুষ্টির সবগুলো উপাদান ডিমে রয়েছে। মানুষের পুষ্টিচাহিদা পূরণে এটি অত্যন্ত উপযোগী।
“তাই ডিমের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে পোলট্রি শিল্পকে করমুক্ত রাখা এবং এর উপকারিতা প্র্রচারে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।”
বাংলাদেশ পোলট্রি শিল্প সমন্বয় কমিটির (বিপিআইসিসি) আহ্বায়ক মসিউর রহমান বলেন, “বর্তমানে ডিমের দৈনিক উৎপাদন প্রায় দুই কোটি, যার ৯৫ শতাংশই বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয়। দেশে ডিমের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
“ডিমের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে পোলট্রি খাতে সরকারের আরও মনোযোগ দেওয়া এবং এখাতকে করমুক্ত ঘোষণা করা উচিৎ।”
বিপিআইসিসির আয়োজনে আলোচনায় আরও অংশ নেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. বিল্লাল আলম ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. মোফাজ্জল হোসেন অংশ নেন।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
ডিম নিয়ে সমাজে প্রচলিত নানা ধরনের ভুল ধারণার কথা তুলে ধরে ডা. মো. বিল্লাল আলম বলেন, “অনেকেই মনে করেন ডিম খেলে কোলস্টেরল বাড়ে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে- এমন ধারনা একেবারেই ভুল।”
অধ্যাপক মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, সপ্তাহে চারটি ডিম খেলে টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৩৭ শতাংশ কমে যায়। সপ্তাহে ৬টি ডিম খেলে স্তন ক্যানসারের সম্ভবনা ৪০ শতাংশ হ্রাস পায়।
বিপিআইসিসির যুগ্ম আহ্বায়ক সামছুল আরেফিন খালেদ বলেন, বাংলাদেশে জনপ্রতি প্রতিবছর গড়ে ৪৫ থেকে ৫০টি ডিম খাওয়া হয়। এফএওর হিসাবে, সুস্থ থাকতে মাথাপিছু অন্তত ১০৪টি ডিম খাওয়া প্রয়োজন।
সরকার ২০২১ সাল নাগাদ জনপ্রতি বছরে ডিম খাওয়ার গড় পরিমাণ ১০৪টিতে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
“এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে দেশে ডিমের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৪০-৪৫ কোটিতে পৌঁছাবে।”
গত দুই দশক ধরে প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্ব ডিম দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৬ সাল ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন সম্মেলনে বিশ্ব ডিম দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়।