রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধির ধারা

চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2015, 06:18 PM
Updated : 6 Oct 2015, 06:27 PM

চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে দেশ থেকে ৮০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেশি।

গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ৭৬৯ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। সে হিসেবে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে দশমিক ৮৩ শতাংশ।

মঙ্গলবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ তথ্যে এ চিত্র উঠে এসেছে।

এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বরেও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি আয় ২ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।

এ মাসে দেশের রপ্তানি খাত থেকে ২৬১ কোটি ৬৭ লাখ ডলার আয় হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রায় তুলনায় প্রায় ৭ শতাংশ বেশি।  গত বছরের সেপ্টেম্বরে ২৫৫ কোটি ২৮ লাখ ডলার রপ্তানি আয় হয়েছিল।

তবে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রপ্তানি আয় বাড়লেও তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ কম হয়েছে।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, তৈরি পোশাকের রপ্তানি বৃদ্ধির প্রভাব মোট রপ্তানি আয়েও পড়েছে।

এর মধ্যে তৈরি পোশাকের নীটওয়্যার পণ্যে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেড়ে ৩২৫ কোটি ডলার আয় হয়। এ খাতে রপ্তানির লক্ষ্য ছিল ৩২১ কোটি ডলার।

অপরদিকে ওভেন গার্মেন্টস রপ্তানিও ভালো হয়েছে। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও গত বছরের তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে ওভেন গার্মেন্টস রপ্তানি হয়েছে ৩১৯ কোটি ডলারের, যা গত বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি।  গত বছরের সেপ্টেম্বরে ২৯৬ কোটি ডলারের ওভেন পণ্য রপ্তানি হয়।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ফার্নিচার, জাহাজ বা বোট, ইলেকট্রিক পণ্য, প্রকৌশল যন্ত্রপাতি, স্টেইনলেস স্টিল পণ্য, টুপি বা ক্যাপ, স্পেশাল ওভেন ফেব্রিকস, টেরিটাওয়েল, কাঁচা পাট, পাটজাতপণ্য, হিমায়িত মাছ, মসলা, ফার্মাসিউটিকেলস, কাঠ ও কাঠের পণ্য, চামড়াজাত পণ্য এবং কাগজ ও কাগজজাত পণ্য রপ্তানি আগের বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় বেড়েছে।

তবে সেপ্টেম্বরে চিংড়ি, তাজা মাছ, চা, সবজি, তামাক, সিমেন্ট, পেট্রোলিয়াম বাই প্রোডাক্ট, পিভিসি ব্যাগ, চামড়া, সিল্ক, উল ও উলের পণ্য, পাটের সুতা, পাটের ব্যাগ, কার্পেট ইত্যাদি পণ্যের রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে।

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রপ্তানি বিশেষ বেড়েছে তা নয়। যতটা রপ্তানি হচ্ছে তার অন্যতম কারণ রপ্তানিকারকরা নতুন বাজার সৃষ্টি করেছে। আগে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারকেন্দ্রীক ছিল। কিন্তু এখন জাপান, কোরিয়া, ব্রাজিল ও মেক্সিকো- এমনকি চীনেও রপ্তানি হচ্ছে।

“তবে মোট রপ্তানি আয় আরও বাড়তো যদি বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বিশেষ করে ক্রেতা দেশ ও প্রতিযোগী দেশের মুদ্রার মানের সাথে আমাদের মুদ্রার মান নির্ধারণ করা হত। কারণ ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতে মুদ্রার মান দুর্বল হয়েছে, যে কারণে সেখানকার ক্রেতারা ইউনিট প্রাইস কম দিচ্ছে। আবার বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভারত, পাকিস্তান তাদের মুদ্রার মান কমিয়ে ওই সব দেশে রপ্তানি বাড়াচ্ছে।”