এ বছর কোরবানি থেকে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ চামড়া পাওয়ার আশা করা হলেও পশু কোরবানি কম হওয়ায় চামড়ার এই ঘাটতি থাকবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার কম পশু কোরবানি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১০/১৫ শতাংশ চামড়া কম সংগ্রহ হতে পারে।”
তবে শেষ পর্যন্ত চামড়া সংগ্রহে কত শতাংশ ঘাটতি থাকবে তার পুরো তথ্য পেতে আরও সময় লাগবে বলে জানান দেলোয়ার।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ছাড়াও বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটঅয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ) এবং বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে আরও দুটি সংগঠন চামড়া শিল্পে রয়েছে।
২৫ সেপ্টেম্বর ঈদের কয়েকদিন পর থেকে ঢাকার বাইরের কোরবানির চামড়া আসতে শুরু করে। সব চামড়া আসতে আরও সময় লাগলেও এ পর্যন্ত চামড়া সংগ্রহের পরিমাণের ওপর ভিত্তি লক্ষ্যমাত্রায় ঘাটতির এই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, “ঢাকা থেকে এবার ১২ লাখ চামড়া পাওয়ার লক্ষ্য থাকলেও এ পর্যন্ত আট লাখ চামড়া পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চার লাখ আমরা সংগ্রহ করেছি, আর বাকি চার লাখ সংগ্রহ করেছে ট্যানারি মালিকরা। ”
এবার চামড়া গতবারের তুলনায় কম নষ্ট হয়েছে জানিয়ে দেলোয়ার হোসেন বলেন, “৫ শতাংশের কম চামড়া নষ্ট হয়েছে এবার ।”
ঈদের আগে রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে চামড়ার মূল্যতালিকা প্রকাশ করে দেশের চামড়া শিল্পের তিন সংগঠন- বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটঅয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ), বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি আফতাব খান বলেন, “আশা করেছিলাম এ বছর ৬৫ লাখ চামড়া পাওয়া যাবে । তবে গত বছরের অনেক চামড়া এখনও রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও পশুর চামড়ার দাম অপেক্ষাকৃত কমেছে। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করেই এবার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল।”
গত বছর সরকার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণের বিষয়টি ব্যবসায়ীদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পর আগের বছরের তুলনায় কম দাম ঠিক করেন তারা। আর এবার যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা গতবারের চেয়েও কম।
গত বছর ট্যানারি ব্যবসায়ীরা রাজধানীতে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া কেনেন ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। ঢাকার বাইরে এর দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা।
প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা; খাসির লবণযুক্ত চামড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকায় সংগ্রহ করা হয়।
ওই সময় প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম ছিল ৫০-৫৫ টাকা। বকরির চামড়া ৪০-৪৫ টাকা এবং মহিষের চামড়া ৪০-৪৫ টাকায় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বছরে বাংলাদেশ থেকে ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া। এর অর্ধেকের বেশি আসে কোরবানির ঈদের সময়।