নম্বর রেখে অপারেটর বদলানোর সুযোগ অনুমোদনের অপেক্ষায়

গ্রাহকদের জন্য মোবাইল ফোন নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর বদলানোর সুযোগ (এমএনপি) করে দিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Sept 2015, 02:36 AM
Updated : 14 Sept 2015, 02:36 AM

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এমএনপি চালু করতে বিটিআরসি যে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল, মন্ত্রণালয় সেই প্রস্তাবে অনুমতি দিয়েছে।”

বিষয়টি চূড়ান্ত করতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন প্রয়োজন হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

কবে নাগাদ এমএনপি সুবিধা গ্রাহকরা পাচ্ছেন- এই প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বছর বা আগামী বছরের শুরুতে এমএনপি শুরু হবে তা বলতে চাচ্ছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই এমএনপি চালু হবে।

“এমএনপি চালু হলে গ্রাহকের সুবিধা হবে, এমএনপিটা আমরা করতে চাই, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর উপর জোর দিচ্ছেন যে এটা আপনারা চালু করেন, এর ফলে গ্রাহক পর্যায়ে উপকার হবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সহায়তা হবে।”

তবে এক্ষেত্রে কিছু জটিলতার কথা তুলে ধরে তারানা বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ফাইলটি এলেই সেই জটিলতা কেটে যাবে এবং দ্রুত শুরু করতে পারব।”

মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) সুবিধা চালু করতে বিটিআরসি একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেবে বলে গত মে মাসে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস।

এমএনপি সুবিধা চালুর বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি পেলেই কাজ শুরু হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন বিটিআরসি প্রধান।

নম্বর না বদলে গ্রাহকদের অন্য অপারেটরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে ২০১৩ সালে জুনে মোবাইল ফোন অপারেটরদের নির্দেশ দেয় বিটিআরসি।

যখন অপারেটরদের ২জি লাইসেন্স নবায়ন করা হয়েছিল তখন গাইডলাইনে লেখা ছিল অপারেটররা মিলে এমএনপি চালু করবে। কিন্তু অপারেটররা সঠিক সময়ে এমএনপি চালু করতে পারেনি।

এরপর বিটিআরসির তত্ত্বাবধানে এমএনপি চালু করতে নতুন গাইডলাইন তৈরি করে সরকারের কাছে দেওয়া হয়। সরকারের কাছে অনুমোদিত হয়ে এলে এটার টেন্ডার এবং লাইসেন্স হবে। যে লাইসেন্স পাবে সে এটাকে অপারেট করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

২০১৩ সালে অপারেটরদের এমএনপি সুবিধা বাস্তবায়ন করার বিষয়ে দেওয়া ওই নির্দেশনায় বলা হয়, এমএনপি সুবিধা দিতে অপারেটরা গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০ টাকার বেশি নিতে পারবে না। সাত মাসের মধ্যেই গ্রাহকদের এই সুবিধা দিতে হবে।

আর এ নির্দেশনা জারির তিন মাসের মধ্যে অপারেটরদের এমএনপি সেবা শুরু করার জন্য একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করতেও বলা হয়েছিল। প্রি-পেইড ও পোস্ট পেইড উভয় ধরনের গ্রাহকই এমএনপি সুবিধা পাবে বলে বলা হয়েছিল।

দীর্ঘ দিন ব্যবহারের ফলে মোবাইল নম্বর একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় রূপে পরিণত হয়। আবার বিভিন্ন অফার আর ভালো নেটওয়ার্ক এবং সুলভ মূল্যে টেলিযোগাযোগ সেবা পেতে প্রায়ই গ্রাহকদের এক অপারেটরকে বাদ দিয়ে অন্য অপারেটররের সংযোগ নিতে হয়।

এ অবস্থায় গ্রাহকের ক্ষমতায়নের জন্য পোস্টিং সার্ভিস প্রচলন এবং পরিচালনা পদ্ধতি বিষয়ে নির্দেশনাবলী প্রণয়ন করতে বিটিআরসি প্রায় এক বছর ধরে কাজ করে অপারেটরদের ওই নির্দেশনা দেয়।

বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশ ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি পরিসেবা চালু রয়েছে।