বাণিজ্য মেলার স্থায়ী ঠিকানা হচ্ছে পূর্বাচল

ঢাকার পূর্বাচলে ২০ একর জমির উপর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্রাঙ্গণ তৈরির একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 August 2015, 03:29 PM
Updated : 4 August 2015, 03:32 PM

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরের ৩১২ নম্বর সড়কে বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ হবে। চলতি বছরই প্রকল্পের কাজ শুরু করে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

চীনের বেইজিং ইনস্টটিউিট অব আর্কিটেকচারাল ডিজাইনের (বিআইডি) নকশা অনুযায়ী এই এক্সিবিশন সেন্টারে ১৫০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা, প্রতিটি নয় বর্গমিটারের ৮০৬টি বুথ, দুটি বড় হলরুম, সম্মেলন কেন্দ্র, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, বাণিজ্য তথ্য কেন্দ্র, সভাকক্ষ, প্রেস সেন্টার, সার্ভিস রুম এবং সাবস্টেশন থাকবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৭৯৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দেবে চীন। ১৩৮ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে। বাস্তবায়নকারী সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) দেবে ৩২ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

রাজধানীর শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই প্রকল্পসহ প্রায় ৩ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকার নয়টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ৯৫৭ কোটি টাকা, সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে ২ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা এবং ইপিবি দেবে ৩২ কোটি টাকা।

সভায় অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘অগমেন্টেশন অব গ্যাস প্রোডাকশন আন্ডার ফাস্ট ট্র্যাক প্রোগ্রাম’ সংশোধিত প্রকল্প। ২০১০ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০১৩ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সংশোধন করে এটি ২০১৬ সালে শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

অনুমোদন পাওয়া আরেক প্রকল্প হলো- ‘সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার জন্য বেলারুশ থেকে মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ’ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২০ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো- ১০৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে পীরগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন; ১১১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে জামালপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন; ১৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন’ প্রকল্প; ১৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালা নির্মাণের মাধ্যমে সেচ দক্ষতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প; ৮৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর, আবেদের ঘাট ও ইসলামপুর এলাকায় পদ্মা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং ২১৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বৃহত্তর কুমিল্লা জেলায় মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প।

নতুন ভূখণ্ডে বিদ্যুৎ সংযোগ

একনেক সভার পরে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী ছিটমহল থেকে সদ্য বাংলাদেশের অংশ হওয়া ভূখণ্ডে আগামী তিন মাসের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এই সংযোগের কাজ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সাময়িকভাবে সেখানে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে বলেছেন তিনি।

“এছাড়া প্রধানমন্ত্রী নতুন ভূখণ্ডের অধিবাসীদের সব ধরনের মৌলিক চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন। বিশেষ করে ওই এলাকার জন্য স্কুল-কলেজ, ধর্মীয় উপাসনালয় ও রাস্তা-ঘাটসহ অবকাঠামো নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ দেন।”