সবার স্বার্থে তাদের ঈদ রাস্তায়

“কেউ রাস্তায় না থাকলে দায়িত্ব কে পালন করবে? কাউকে না কাউকে তো ত্যাগ স্বীকার করতেই হবে, এতে কষ্টের কিছু নেই”- সোজা-সাপটা জবাব ট্রাফিক কনস্টেবল ফারুক হোসেনের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2015, 01:32 PM
Updated : 18 July 2015, 01:46 PM

সাধারণ ছুটিতে শনিবার যখন প্রায় সবাই পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপনে, তখন মানিক মিয়া এভিনিউতে সড়কে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।   

ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের পশ্চিম বিভাগের এই কনস্টেবল সুযোগ করে লালমাটিয়ার মসজিদে ঈদের নামাজ পড়ে নিয়েছেন। তারপর আবার ফিরে এসেছেন দায়িত্বস্থলে।

ফারুকের না খাকলেও ফার্মগেইটে দায়িত্ব পালন করা একজন কনস্টেবলের অনেক ক্ষোভ। জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নাই বা শুনলেন, গরিব মানুষ, শুনে কী হবে? লিখে দিলে চাকরি নিয়ে টানাটানি হলে কে রক্ষা করবে?”

ঈদের দিনে বৃষ্টির মধ্যেই রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করার ফাঁকেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কথা হয় কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে।

ঈদের দিনে যে রকম থাকা উচিত রাস্তায় যানচলাচল সে রকমই ছিল জানান টাউন সাব ইন্সপেক্টর মজিবর রহমান।

তবে ঈদের জামাতের সময় জাতীয় ঈদগাহ এলাকা, বায়তুল মোকাররম এলাকায় ট্রাফিক পুলিশকে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে বেশ হিমশিম খেতে হয়।

ঈদের কারণে ঢাকার বাইরে চলে যাওয়া ছাড়াও বৃষ্টির কারণে অনেকেই রাস্তায় বের হনননি ফলে যানজট বা বড় ধরণের কোনো বিশৃঙ্খলা ছিল না। ভিআইপি সড়কেও রিকশা চলেছে কোনো বাধা ছাড়াই।

ঈদের কারণে ট্রাফিক পুলিশ খুব একটা ছুটিতে যাননি। শতকরা ২০ ভাগ পুলিশ সদস্য এবার ঈদে ছুটিতে গেছেন বলে জানান ‘মুন্সি’ বলে পরিচিত ট্রাফিকের এক কনস্টেবল।

তুলনামূলকভাবে উচ্চশিক্ষিত কনস্টেবলকে প্রশাসনিক কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাকেই সহকর্মীরা ‘মুন্সি’ বলে সম্বোধন করেন। এটা প্রাতিষ্ঠানিক কোনো পদ নয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মুন্সি বলেন, তার জোনে কর্মকর্তাসহ ২০৬ জন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য রয়েছেন। এবার ঈদে ৪০ জনের মতো ছুটিতে গেছেন। যারা আছেন তারা পালাক্রমে ঈদের দিনেও দায়িত্ব পালন করছেন।

যা্ন চলাচল কম থাকায় আসাদ গেইট, ফার্মগেইট, কল্যাণপুর এলাকায় বেশ কয়েকজন ট্রাফিক সার্জেন্টকে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে গল্পগুজব করে সময় পার করতে দেখা গেছে।

রফিকুল ইসলাম নামে এক কনস্টেবল জানান, দুপুরে তিনি দায়িত্ব পালন করতে রাস্তায় নেমেছেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল শেষে মিরপুর ১৪ নম্বর পুলিশ লাইন (পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট-পিওএম) মসজিদে ঈদের নামাজ পড়েন। পরে দুপুরে খাবার খেয়ে রাস্তায় নামেন।

“রাস্তায় তেমন যানবাহন নেই। এজন্য আসলে নিয়ন্ত্রণেরও প্রয়োজন হচ্ছে না,” বলেন রফিকুল।

ট্রাফিক পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বলা হয়, রাজধানীর রাস্তাগুলোতে যানবাহনের সংখ্যা অনেক কম। ফলে যান জটের কোন প্রশ্নই নাই।

তবে দুপুরের পর থেকে বিনোদন কেন্দ্র হাতিরঝিল এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির মধ্যেও এখানে প্রচুর গাড়ি ছিল।