এসআইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন এক ব্যবসায়ী।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2015, 07:41 PM
Updated : 7 July 2015, 07:41 PM

মঙ্গলবার দুপুরে কুমারখালী থানার এসআই কাফী’র বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন তিনি।

অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম বলেছেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

অভিযোগকারী উজ্জ্বল (২৫) ঢাকা থেকে বিভিন্ন ধরনের সিরামিক পণ্য এনে স্থানীয় দোকানে বিক্রি করেন। তিনি উপজেলার শিলাইদহ বেলগাছি গ্রামের আমির ব্যাপারীর ছেলে।

সোমবার মধ্যরাতে কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে মোটরসাইকেলে ছোট ভাইকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন উজ্জল। তার ছোট ভাই আজিজুর (২৩) সৌহার্দ পরিবহনের একটি নৈশকোচে ঢাকা থেকে ফেরেন।

পথে উপজেলার আলাউদ্দিন নগর মোড় এলাকায় এসআই কাফী তার গতিরোধ করেন। পরে গ্রেপ্তারের ভয় দেখালে তাকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন বলে অভিযোগ উজ্জ্বলের।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আলাউদ্দিন নগর মোড় এলাকায় টহলরত এসআই কাফী সঙ্গের ফোর্সসহ তল্লাশির নামে পথরোধ করেন। এ সময় মাদক বিক্রির অভিযোগ তুলে থানায় নেওয়ার উদ্দেশ্যে আমাদের পিকআপে তোলে।

“কিন্তু কিছুদূর গিয়ে এক অন্ধকারে পিকআপ থামিয়ে আমার সঙ্গে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেন ওই পুলিশ সদস্য। এরপর দুই ভাইকে বেদম মারধর করে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন।”

পরে এসআই কাফীকে সঙ্গে থাকা ব্যবসার টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পান বলে অভিযোগ করেন উজ্জ্বল।

তিনি বলেন, “টাকাটা হাতে নিয়েই তার অস্ত্র আমার বুকে ধরে বলেন সোজা বাড়ি চলে যাবি; এসব কথা কাউকে বলবি না, তাহলে ক্রসফায়ার দিয়ে মারা হবে তোকে।”

এই ব্যবসায়ী বলেন, পরদিন মঙ্গলবার সকালে শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন খান তারেককে বিষয়টি জানালে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন। কিন্তু জিডি করতে কুমারখালী থানায় গেলেও থানা থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়।

পরে উপায়ান্তর না পেয়ে জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিমের সঙ্গে তার দপ্তরে দেখা করে অভিযোগ করেন বলে জানান তিনি।

ঘটনার বিবরণ শুনে পুলিশ সুপার বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

শিলাইদহ ইউপি চেয়ারম্যান তারেক জিডি করতে পরামর্শ দেওয়ার কথা স্বীকার করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উজ্জ্বল একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী; ঢাকা থেকে সিরামিক পণ্য এনে বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করেন। জানা মতে তিনি মাদক সেবন বা এ ধরনের কোনো অপরাধে জড়িত নন।”

পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উজ্জ্বল নামের ছেলেটি আমার দপ্তরে এসেছিলেন। ঘটনার বিবরণ শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

কুমারখালী থানার ওসি মহিবুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টির মীমাংসার জন্য সবাইকে ডেকেছি। যে-ই দোষী হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে এসআই কাফী’র সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বিষয়ে আমার কোনো কথা বলার নেই, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যা বলবেন সেটাই আমার বক্তব্য।”