মন্ত্রিসভায় রদবদলের কোনো খবর নেই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন, এই বিষয়ক কোনো খবর তার কাছে নেই।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2015, 10:35 AM
Updated : 7 July 2015, 02:58 PM

মঙ্গলবার দুপুরে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফকে অব্যাহতি দিতে বলেছেন বলে কোনো সূত্রের নাম উল্লেখ না করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “বলার মতো কোনো খবর আমার কাছে নেই।”

মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনসহ এই বিষয়ক দাপ্তরিক কার্যক্রম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেই হয়ে থাকে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উনি (আশরাফ) মিটিং-টিটিংয়ে আসেন না, এজন্য সরিয়ে দিলে ভালো হয়।”

সাত বছর ধরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সামলে আসা ৬৩ বছর বয়সী সৈয়দ আশরাফ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও।

একনেকের বৈঠকে মন্ত্রী আশরাফ অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জে ছিলেন, তবে সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি তিনি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সন্ধ্যায় জেলা শহরে আওয়ামী লীগের এক ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেও সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান তিনি।

সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তিনি জেলা শহরে পৌঁছার পর প্রথমে যান খরমপট্টি এলাকায় নিজের বাড়িতে। সেখান থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ইফতার মাহফিলে যোগ দেন।

প্রশাসন থেকে দেওয়া তার সফরের কর্মসূচি থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে তিনি কিশোরগঞ্জ সার্কিট হাউসে থাকবে। বুধবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় যোগ দেবেন তিনি। এরপর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে অংশ নেবেন।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যাকে অব্যাহতি দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়েছিল (ফাইল ছবি)

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বন্দি হওয়ার প্রেক্ষাপটে দলে সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের ভার আসে জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে আশরাফের উপর।

দায়িত্ব পালনে আশরাফের সফলতার মধ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল পরে মুক্তি পেলেও দায়িত্বে আর ফিরতে পারেননি। পরে ২০০৯ সালে কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আশরাফ।

তার আগে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনার সরকারে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আশরাফ। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার গঠন করলে একই দায়িত্বই তাকে দেন শেখ হাসিনা।

কিশোরগঞ্জের সংসদ সদস্য আশরাফ ছাত্রজীবনে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জেলখানায় সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর লন্ডনে চলে যান আশরাফ। সেখানে আওয়ামী লীগে সক্রিয় ছিলেন তিনি।

১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর শেখ হাসিনার ওই সরকারে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হন আশরাফ।

১৯৯৬ সাল থেকে প্রতিটি সংসদ নির্বাচনেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন তিনি।