তরল কোকেন: আলামত সংগ্রহে আদালতের নির্দেশনা চান তদন্ত কর্মকর্তা

চট্টগ্রাম বন্দরে আটক সূর্যমুখী তেলের চালানে তরল কোকেন পাওয়ার ঘটনায় আলামত সংগ্রহের জন্য আদালতের নিদের্শনা চেয়ে আবেদন করেছেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2015, 05:33 PM
Updated : 6 July 2015, 05:33 PM

সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে আবেদনটি করেন তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (উত্তর) মো. কামরুজ্জামান।

এর আগে সকালে পুলিশ কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান আলাতম সংগ্রহ করতে চট্টগ্রাম বন্দরের চার নম্বর জেটি এলাকায় যান। সেখানে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে তিনি ফিরে আসেন।

কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা আলামত সংগ্রহে গিয়েছিলাম। কাস্টমসের লোকজন এসেছিল পরে, আর তাদেরকে পাইনি। সব পক্ষ উপস্থিত না থাকায় আলামত সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।”

তবে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার হোসেন আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আলামত সংগ্রহের কাজটি একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হয়।

“এ বিষয়ে তারা (পুলিশ) আমাদের একটি চিঠি দেয়। চিঠি আমার কাছে পৌঁছার পরই সেখানে লোক পাঠিয়ে দেখি- তারা চলে গেছেন। লিখিতভাবে জানানোর পর প্রয়োজনীয় লোকজন জড়ো করার সময় তো দিতে হবে।”

হোসেন আহমদ বলেন, ১০৭টি ড্রাম বন্দরেই রয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা এসে যে কোনো সময় আলম সংগ্রহ করতে পারবেন।

এদিকে সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মোহাম্মদ ফরিদ আলম আইনি প্রক্রিয়ায় আলামত সংগ্রহ করে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য না পাঠানোয় অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

ফাইল ছবি

পাশাপাশি মামলার জব্দ তালিকা না থাকা এবং মামলায় চোরাচালান সংক্রান্ত ধারা সংযোজন না করাকে ‘অসঙ্গতি’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এই মামলায় গ্রেপ্তার রয়েছেন চারজন। তারা হলেন- গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান খান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) এ কে আজাদ, মোস্তফা কামাল নামের এক ব্যক্তি এবং আমাদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মচারী গোলাম মোস্তফা সোহেল।

এদের মধ্যে সোহেলকে পাঁচ দিনের এবং ৩০ জুন ঢাকায় গ্রেপ্তার অন্য তিনজনকে ১০ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

তদন্তকারীরা বলছেন, মোস্তফা কামালের আত্মীয় বকুল এই ‘পাচারচক্রের’ হোতা, যিনি যুক্তরাজ্যে থাকেন। রাজু নামের এক ভারতীয় নাগরিকও এর সঙ্গে জড়িত।

এ ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ১০ জনের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।

সূর্যমুখী ভোজ্য তেলের ঘোষণা দিয়ে দেড় মাস আগে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা কন্টেইনারটিতে থাকা নমুনা পরীক্ষা করে গত ২৮ জুন তরল কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়ার কথা জানায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেড বলিভিয়া থেকে ওই তেলা আমদানি করে। কনটেইনারে থাকা ১০৭টি ড্রামের মধ্যে একটিতে পাওয়া গেছে তেল মেশানো তরল কোকেন।

ওই ড্রামটির ১৮৫ কেজি সানফ্লাওয়ার তেলের এক-তৃতীয়াংশই তরল কোকেন বলে পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দার।