মানবপাচারের ট্রানজিট বাংলাদেশ: স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

পাচারকারীরা বাংলাদেশকে মানবপাচারের অন্যতম ট্রানজিট হিসাবে ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2015, 09:17 AM
Updated : 6 July 2015, 09:17 AM

সোমবারের জাতীয় সংসদে এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে মানবপাচারের বিষয়টি মিথ্যা নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ মানব পাচারের ট্রানজিট হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।”

এপ্রিলের শেষ দিকে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে পাচারকারীদের একটি পরিত্যক্ত আস্তানায় গণকবর পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাগর পথে মানবপাচার নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

এরপর মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড উপকূলে সাগরে ভাসমান অবস্থায় পাচারকারীদের কয়েকটি নৌকা থেকে তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে, যারা বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য।

মিয়ানমারে সরকারের নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা গত কয়েক বছর ধরেই সমুদ্রপথে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিবেশী মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ থেকেও কাঠের নৌকা বা মাছ ধরার ট্রলারে করে নিয়মিত মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি পুরুষ চাকরির মিথ্যা আশ্বাসে বিদেশে পাড়ি জমায় এবং শ্রম বা ঋণ-দাসের মতো ভয়াবহ শোষণের অমানবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।”

মানবপাচার রোধে প্রতি দুই মাস অন্তর জাতীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথাও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

“মানব পাচারের বিরুদ্ধে আমরা অত্যন্ত সজাগ দৃষ্টি রেখেছি। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা এদের চিহ্নিত করেছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা মানবপাচার রোধে যথেষ্ট পরিমাণ ব্যবস্থা নিয়েছি।”

মানবপাচার বৃদ্ধি এবং থাইল্যান্ড ও মালেয়শিয়ায় গণকবরের সন্ধান ও অভিবাসীদের নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “মানবপাচারের মত জঘন্যতম অপরাধ দমন বর্তমান সরকার সবসময়ই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। পাচারের শিকার বাংলাদেশিদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

“মানবপাচার রোধে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের একটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা (টাস্ক ফোর্স) আছে। এর আওতায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে ৬১, ইন্দোনেশিয়া থেকে ১০৭, মিয়ানমার থেকে ১৮৭ ও থাইল্যান্ড থেকে চারজনসহ মোট ৩৫৯ জন বাংলাদেশি অভিবাসন প্রত্যাশীকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।