ছিটমহলে যৌথ জরিপ শুরু

বাংলাদেশ ও ভারতের ভেতরে থাকা ১৬২টি ছিটমহলের বাসিন্দাদের সংখ্যা ও তাদের নাগরিকত্ব নির্ধারণে যৌথ জরিপ শুরু হয়েছে।

লালমনিরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2015, 08:48 AM
Updated : 6 July 2015, 08:48 AM

স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের দলিল হস্তান্তরের এক মাস পর সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় লালমনিরহাটের ভিতরকুঠি দাসপতাই ছিটমহল থেকে এই কাজ শুরু হয়।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশের ভেতরে ১১১টি ভারতীয় ছিটমহলে ৬৮ জন এবং ভারতে বাংলাদেশি ৫১টি ছিটমহলে ৩৪ সদস্যের যৌথদল গণনায় অংশ নিচ্ছেন।

১৬ জুলাই জরিপ শেষ হওয়ার পর ৩১ জুলাই থেকে ছিটমহল বিনিময় শুরুর কথা রয়েছে।

লালমনিরহাটে ভারতের ছিটমহল রয়েছে ৫৯টি। ভিতরকুঠি দাসপতাই ছিটমহলে যৌথ জনগণনা শুরুর সময় কুচবিহারের দিনহাটা ভূমি অফিসের রেভিনিউ ইন্সপেক্টর হরিশ চন্দ্র বর্মন এবং লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার জাহাঙ্গীর আলমসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জরিপদলের সদস্যরা ছিটমহলগুলোয় বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জরিপ ও গণনা পরিচালনা করবেন। পরে এর প্রতিবেদন দেওয়া হবে জয়েন্ট বাউন্ডারি ওর্য়াকিং গ্রুপের বৈঠকে।

কীভাবে এই জরিপ করতে হবে সে বিষয়ে গত ২ জুলাই লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর হলরুমে বাংলাদেশের জেলা প্রসাশক ও ভারতের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের বৈঠক হয়। ৫ জুলাই জরিপ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

জুনের প্রথম দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের সময় সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে কয়েক দশক ধরে ঝুলে থাকা ছিটমহল বিনিময়ের বাধা দূর হয়।

২০১১ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১টি ছিটমহলে ৩৭ হাজার মানুষের বাস। অন্যদিকে ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের বাসিন্দা ১৪ হাজার।

স্থল সীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকল অনুযায়ী, ভারতের ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অংশ হয়ে যাবে, বাংলাদেশের ৫১টি চলে যাবে ভারতের সঙ্গে। ছিটমহলবাসীকে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নাগরিকত্ব বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

অর্থাৎ ভারতের ছিটমহলের বাসিন্দা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিলে তারা বর্তমান বাসস্থানেই থেকে যেতে পারবেন। যদি ভারতের নাগরিকত্ব নিতে চান, তবে তাকে ওপারে চলে যেতে হবে।

এজন্য তাদের যৌথদলের প্রতিনিধিদের কাছে আবেদন করতে হবে। ১ অগাস্ট থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে পছন্দের দেশের মূল ভূখণ্ডে চলে যেতে হবে।

স্থানান্তরের সময় বর্তমান জমি বিক্রি করে যেতে পারবেন, অর্থকড়িসহ অস্থাবর সম্পত্তিও সঙ্গে নিতে পারবেন।