সিটি ভোট: চট্টগ্রামেও সাংবাদিক নাজেহালে চিহ্নিত হয়নি কেউ

‘উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণের অভাবে’ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা ও নাজেহালের ঘটনায় দায়ী কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি নির্বাচন কমিশনের  তদন্ত কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2015, 03:06 PM
Updated : 5 July 2015, 03:45 PM

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা রোববার ২৮০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশন সচিবের কাছে জমা দেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। কর্মপরিধি মেনে কাজ শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি আমরা।

“বিষয়টি কমিশনই দেখবে, বিস্তারিত কিছু জানানো যাবে না।”

এক দফা সময় বাড়ানোর পর ৫ জুলাই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল তদন্ত কমিটির। গত ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ভোটে সাংবাদিকদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা ও  নাজেহালের ঘটনায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন।

ঢাকার তদন্ত কমিটি ২ জুলাই প্রায় ৩৪০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে সাংবাদিকদের হয়রানিতে কাউকে চিহ্নিত করা হয়নি। উল্টো সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে কড়াকড়ির সুপারিশ করে ঢাকার তদন্ত কমিটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম তদন্ত কমিটির এক সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, এটা আপনাদের বুঝতে হবে।

“নব্বইয়ের আন্দোলনে ডা. মিলন যে গুলিতে প্রাণ হারান এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কিন্তু সিটি ভোটে ঘটনা যে ঘটেছে তা তো অস্বীকার করা যাবে না। এখন আপনাদের বোঝার জন্যে যেটুকু বলার সেটুকু বলছি...।”

সাংবাদিকদের নাজেহালের পিছনে কোনো মহলের ইন্ধন ছিল কি না তা নিয়েও মন্তব্য করতে রাজি নন তদন্ত কমিটি সংশ্লিষ্টরা।

তবে ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ‘উপযুক্ত’ সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান তারা।

নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের প্রতিবেদনের কঠোর সমালোচনা করেছেন দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২৮ এপ্রিল ভোটের দিন কী ঘটেছিল জনগণ গণমাধ্যমে সরাসরি যেমন দেখেছে, ইসিও স্বীকার করেছে। এসব নিয়ে পরদিন গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদনও হয়েছে।”

এরপরও সংশ্লিষ্ট সবার সাক্ষ্য নিয়ে দায়ী কাউকে চিহ্নিত করতে না পারার বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“এ ধরনের প্রতিবেদনে বস্তুনিষ্ঠতার ঘাটতি রয়েছে; তা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না। ইসির প্রতি মানুষের আস্থার সংকট আরও বাড়বে,” বলেন ইফতেখারুজ্জামান।

এ ধরনের প্রতিবেদনের মাধ্যমে অনিয়ম রোধে ইসির ‘কমিটমেন্টের অভাব ও নেতৃত্বের দুর্বলতার’ বহিঃপ্রকাশ ঘটছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের অন্যতম অংশীজন সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা ও নাজেহালের ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত না করে ইসির ব্যর্থতা ঢাকার জন্যে তদন্তের নামে একটা প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।”