আর শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, তিনি টি-টোয়েন্টি খেলে ‘ছক্কা মারার’ চেষ্টা করছেন।
১১ লাখ শিক্ষার্থীর কলেজে ভর্তি নিয়ে অভাবনীয় বিশৃঙ্খলার পর রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন শিক্ষামন্ত্রী।
অনলাইনে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তির মেধা তালিকা প্রকাশ করতে গিয়ে সৃষ্ট জটিলতার জন্য ‘দুঃখ প্রকাশ’ করে তিনি বিষয়টিকে ‘ক্ষমাসুন্দরভাবে’ দেখার অনুরোধ করেন।
নাহিদ বলেন, “বড় কাজ করতে গেলে ছোট ভুল হতেই পারে। তবে এটা হোক আমরা তা চাই না। এটা উন্নয়নের সমস্যা, উন্নয়নের বেদনা।”
শিক্ষা সচিবের কাছে একজন সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, “আপনি কি টি-টোয়েন্টি খেলছেন?”
উত্তরে নজরুল ইসলাম বলেন, “আমি মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের নেতৃত্বে স্পেসিফিকালি টি-টোয়েন্টি খেলছি। শুধু টি-টোয়েন্টি না, টি-টোয়েন্টির লাস্ট ওভার খেলছি।
“লাস্ট ওভার খেললে লাস্টের দিকে... সাথে পরামর্শ করে। সুতরাং পরামর্শ করে টিম স্পিরিট নিয়ে ডেফেনেটলি কাজ করছি।”
শিক্ষা সচিব বলেন, “ছক্কা মারার চেষ্টা করছি, ছক্কা মারতে গেলে অনেক সময়... আউট হয়, সেটা হতে পারে।”
গত কয়েকবছরের মত এবারও একাদশে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাওয়া জিপিএ’র ভিত্তিতে। এবার এই কার্যক্রম চলে অনলাইনে, শিক্ষার্থীদের ফি জমা দিতে হয়েছে এসএমএসের মাধ্যমে।
অনলাইনে সব কলেজে ভর্তির নির্দেশনা জারি করা হলেও ১১ লাখ শিক্ষার্থীর ৩৩ লাখ আবেদন সমন্বয়ের মাধ্যমে ভর্তির জন্য মেধা তালিকা প্রকাশ করতে গিয়ে অকার্যকর হয়ে পড়ে বুয়েটের সহায়তায় তৈরি সফটওয়্যার।
সেই কারিগরি জটিলতা কাটিয়ে নির্ধারিত তারিখের তিন দিন পর ২৮ জুন মধ্যরাতে ভর্তির জন্য প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় হাজারো ভুলের কারণে পরেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয় শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষামন্ত্রীর লিখিত নির্দেশনা অমান্য করে তার অনুপস্থিতিতে শিক্ষা সচিব এবার ভর্তি নীতিমালা জারি করেন।
সংসদ অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ব্যস্ততা দেখিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্ন না করার অনুরোধ করলেও শেষ পর্যন্ত কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন নাহিদ।
ভর্তি নীতিমালা জারির বিষয়ে সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “ওই সময় আমি দেশের বাইরে ছিলাম। সবাই মিলেই কাজ করব, সফল হলে সবাই হব, ব্যর্থ হলেও সবাই হব।
“আপনাদের (সাংবাদিক) কাছে অনুরোধ, আমাদের মাঝে বিরোধ খোঁজার কোনো কারণ নেই।”
শিক্ষা সচিব বলেন, “সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আলাপ-আলোচনা করতে হবে, সেখানে দ্বিমত হতে পারে। তবে যখন সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে একবার, তখন সিদ্ধান্তটা পালন করতে হবে।”
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ড কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১৬ মে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোতে (ব্যানবেইজ) শিক্ষা সচিবের সভাপতিত্বে ভর্তি নীতিমালা নিয়ে সভা হয়। এরপর সচিব ২৫ মে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করতে মন্ত্রীর অনুমোদন চান।
কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী তাতে অনুমোদন না দিয়ে হাতে লেখেন, যেসব কলেজে ৩০০ বা তার বেশি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে, সেসব কলেজে এবার অনলাইন বা এসএমএসে ভর্তি করে আগামীতে সব কলেজে পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়।
শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ১ জুন ভর্তি নীতিমালা জারি করা হলেও ‘কাউকে কিছু না জানিয়ে’ শিক্ষাসচিব পরদিন নতুন নীতিমালা জারি করেন, যাতে বোর্ড অনুমোদিত সব প্রতিষ্ঠানে অনলাইন অথবা এসএমএসে ভর্তি প্রক্রিয়া চালাতে বলা হয়।
ফল প্রকাশের দিন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবু বক্কর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন,শুধুমাত্র ৫০০ আসনের কলেজগুলোতে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম সারার বাধ্যবাধকতা রাখা হলে সার্ভারে জটিলতা কম হতো বলে তিনি মনে করেন।