কোকেন রহস্যভেদে ১০ গোয়েন্দা

ভোজ্যতেলের ছদ্মাবরণে তরল কোকেন আটকের ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2015, 05:34 AM
Updated : 4 July 2015, 05:55 AM

এই কমিটি গঠনের কথা শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার কুসুম দেওয়ান।

কুসুম দেওয়ান নিজেই ১০ সদস্যের এই কমিটির প্রধান। তার সঙ্গে আরও রয়েছেন কয়েকজন অতিরিক্ত উপকমিশনার, সহকারী কমিশনার ও পরিদর্শক।

এই মামলায় গ্রেপ্তারদের মধ্যে খান জাহান আলী লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেলকে কয়েকদিন আগে জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।

বন্দর নগরীর খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলীর নামে সূর্যমুখী তেলের ড্রামে কোকেন আনা হয়েছিল। খান জাহান আলীর মালিক নুর মোহাম্মদ এই মামলার আসামি, তবে তিনি পলাতক।

গ্রেপ্তার অন্য তিনজন হলেন- আতিকুর রহমান খান, এ কে আজাদ ও মোস্তফা কামাল। ঢাকায় গ্রেপ্তার এদের ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ গত বৃহস্পতিবার দেয় চট্টগ্রামের আদালত।

আতিক গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী, আজাদ কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন)।

মোস্তফা কামালের আত্মীয় যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি বকুল মিয়া এই মাদক পাচারের হোতা বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ।

চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার গোলাম মোস্তফা সোহেল। তাকে গ্রেপ্তারের পরই কোকেনের কন্টেইনারটি শনাক্ত করা হয়

বন্দরে কোকেন আটকের মামলায় গ্রেপ্তার (বাঁ থেকে) এ কে আজাদ, মোস্তফা কামাল ও আতিকুর রহমান খান। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের আদালতে তাদের হাজির করা হলে রিমান্ডে পাঠানো হয়।

 

বন্দরে আসা কন্টেইনারের নমুনা পরীক্ষার আগেই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক সোহেলকে আটক করে পুলিশ। গত ২৮ জুন নমুনা পরীক্ষায় কোকেনের অস্তিত্ব মেলার পর মামলা করে সোহেলকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

কোকেন পাচারের এই ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

এই কোকেন পাচারে যুক্তরাজ্য, বলিভিয়া, ভারত ও বাংলাদেশের মাদক পাচারকারীরা জড়িত বলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।

তারা বলছেন, সূর্যমুখী তেলের কন্টেইনারে তেলের সঙ্গে মিশিয়ে এই কোকেন ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে নামানো হয়েছিল।

বলিভিয়া থেকে আনা এই ভোজ্য তেল জাহাজে তোলা হয়েছিল উরুগুয়ের মন্টিভিডিও বন্দর থেকে। সিঙ্গাপুর হয়ে গত ১২ মে কনটেইনারটি এসে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।

ফাইল ছবি

 

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে কনটেইনারটি আমদানি করা হলেও বন্দরে আসার পর এর মালিকানা কেউ দাবি করেনি।

৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে থাকা কনটেইনারটি সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। ৮ জুন বন্দরে কায়িক পরীক্ষায় ১০৭টি ড্রামের কোনোটিতে কোকেনের অস্তিত্ব না পাওয়ার পরও পুলিশের চাপে নমুনা পাঠানো হয় ঢাকায়।

এরপর গত ২৮ জুন কন্টেইনারে ১০৭টি ড্রামের মধ্যে ৯৬ নম্বরটির তরলের পরীক্ষায় কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়ার কথা জানায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

ওই ড্রামটির ১৮৫ কেজি সানফ্লাওয়ার তেলের এক-তৃতীয়াংশই তরল কোকেন বলে পরীক্ষায় নিশ্চিত হন গোয়েন্দারা। এরপর চট্টগ্রাম বন্দর থানার এসআই ওসমান গণি মামলা করেন।