সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন বন্যার

লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বাংলাদেশ সরকারের ‘আন্তরিকতা’ নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছেন তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা।

ডেস্ক রিপোর্টবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2015, 01:58 PM
Updated : 3 July 2015, 01:58 PM

বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বন্যা বলেছেন, “তদন্তে আমি সন্তুষ্ট না। আমি এতে অবাক হই না । কারণ এটাই হওয়ার কথা ছিল।”

বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে এর আগে অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।  

যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মুক্তমনা লেখক অভিজিৎ ও বন্যা বইমেলায় অংশ নিতে গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় আসেন।

২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় হামলাকারীদের চাপাতির আঘাতে নিহত হন অভিজিৎ। হামলায় প্রাণে বেঁচে গেলেও একটি আঙুল হারান ব্লগার বন্যা।

ওই ঘটনার পর এ পর্যন্ত কেবল উগ্রপন্থি ব্লগার ফারাবী শফিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফারাবী ফেইসবুকে অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়ে লিখেছিলেন, বাংলাদেশে ফিরলে তাকে হত্যা করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সহযোগিতা করছে সে দেশের তদন্ত সংস্থা এফবিআই। কিন্তু এখনও অনেকগুলো ধারণা নিয়ে তদন্তে হাতরে ফিরছে পুলিশ।

শুক্রবার বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বন্যা বলেন, “আমি জানি না বাংলাদেশ সরকার কতটা আন্তরিক। আমার ধারণা, তারা অনেক কিছুই জানে; না জানার কথা না তো।”

অভিজিৎ খুন হওয়ার কয়েকদিন পর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান বন্যা। তখন থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে কেউ আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বলে তিনি জানিয়েছেন।

এফবিআই যোগাযোগ রাখলেও বাংলাদেশে তদন্তের ক্ষেত্রে ‘তেমন কিছু করার নেই’ বলে তারা বন্যাকে জানিয়েছেন।

অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের এক মাসের মাথায় খুন হন ওয়াশিকুর রহমান বাবু নামে এক ‘অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট’। তার দুই মাসের মাথায় সিলেট খুন হন মুক্তমনার আরেক ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ। তারা দুজনেই অভিজিতের মতো ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লেখালেখি করতেন। অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেও তারা ছিলেন সক্রিয়।

এর মধ্যে অভিজিৎ ও অনন্ত হত্যার দায় স্বীকার করে আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার নামে বার্তা দেওয়া হলেও এসব হত্যাকাণ্ডের পিছনে আসলে কারা আছে, তা উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।  

অভিজিৎ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক ফজলুর রহমানের ধারণা, এর পেছনে রয়েছে আনসারউল্লাহ বাংলাটিমের সদস্যরা। আল কায়েদার সঙ্গে আনসারউল্লাহর সম্পর্ক থাকতে পারে বলেও পুলিশের সন্দেহ। 

বিবিসি বাংলাকে বন্যা বলেন, অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পেছনে একটি বড় ‘আন্তর্জাতিক চক্র’ জড়িত বলে তার ধারণা। তিনি মনে করেন, শুধু ‘কয়েকজন ব্যক্তি’ মিলে অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড ঘটায়নি।

কিন্তু সরকার আদৌ এ বিষয়গুলোর গভীরে তদন্ত করতে চায় কিনা- তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ রয়েছে অভিজিতের স্ত্রীর।