তরল কোকেন: ঢাকায় আটক ৩ জনও রিমান্ডে

চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের চালানে ‘তরল কোকেন’ পাওয়ার ঘটনায় ঢাকায় গ্রেপ্তার তিন জনকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে পেয়েছে চট্টগ্রাম পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2015, 11:53 AM
Updated : 2 July 2015, 11:53 AM

এই কোকেন পাওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেলকে ইতোমধ্যে পাঁচ দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

এখন আতিকুর রহমান খান, এ কে আজাদ ও মোস্তফা কামালকেও ১০ দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম ফরিদ আলম।

এদের মধ্যে আতিক গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী, আজাদ কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন)।

মোস্তফা কামালের আত্মীয় যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি বকুল মিয়া এই মাদক পাচারের হোতা বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ।

এই তিনজনকে গত ৩০ জুন ঢাকায় আটকের পর বুধবার রাতে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে গোয়েন্দা পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়। 

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী মুত্তাকি ইবনু মিনান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রত্যেককে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।”

বন্দরে আসা কন্টেইনারের নমুনা পরীক্ষার আগেই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক সোহেলকে আটক করে পুলিশ।

গত ২৮ জুন নমুনা পরীক্ষায় কোকেনের অস্তিত্ব মেলার পর মামলা করে সোহেলকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলার অন্য আসামি খান জাহান আলী লিমিটেডের মালিক নুর মোহাম্মদ এখনও পলাতক।

এই কোকেন পাচারে যুক্তরাজ্য, বলিভিয়া, ভারত ও বাংলাদেশের মাদক পাচারকারীরা জড়িত বলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।

তারা বলছেন, সূর্যমুখী তেলের কন্টেইনারে তেলের সঙ্গে মিশিয়ে এই কোকেন ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে নামানো হয়েছিল।

ফাইল ছবি

বলিভিয়া থেকে আনা এই ভোজ্য তেল জাহাজে তোলা হয়েছিল উরুগুয়ের মন্টিভিডিও বন্দর থেকে। সিঙ্গাপুর হয়ে গত ১২ মে কনটেইনারটি এসে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে কনটেইনারটি আমদানি করা হলেও বন্দরে আসার পর এর মালিকানা কেউ দাবি করেনি।

৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে থাকা কনটেইনারটি সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। ৮ জুন বন্দরে কায়িক পরীক্ষায় ১০৭টি ড্রামের কোনোটিতে কোকেনের অস্তিত্ব না পাওয়ার পরও পুলিশের চাপে নমুনা পাঠানো হয় ঢাকায়।

এরপর গত ২৮ জুন কন্টেইনারে ১০৭টি ড্রামের মধ্যে ৯৬ নম্বরটির তরলের পরীক্ষায় কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়ার কথা জানায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

ওই ড্রামটির ১৮৫ কেজি সানফ্লাওয়ার তেলের এক-তৃতীয়াংশই তরল কোকেন বলে পরীক্ষায় নিশ্চিত হন গোয়েন্দারা। এরপর চট্টগ্রাম বন্দর থানার এসআই ওসমান গণি মামলা করেন।

এই ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।