সিপি গ্যাংয়ের অনুদান প্রাপ্তিতে প্রতিক্রিয়া-সমালোচনা

তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে উদ্ভাবনী কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে অনুদান পেয়ে ফেইসবুকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার সমর্থকদের ইন্টারনেটভিত্তিক সংগঠন সিপি গ্যাং।

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2015, 04:24 PM
Updated : 1 July 2015, 06:50 PM

অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের অনেকে ফেইসবুকে দেওয়া তাদের সমালোচনামূলক পোস্টে বলেছেন, ইন্টারনেটে কুরুচিপূর্ণ সংগঠিত আক্রমণকারীদের জনগণের করের টাকার ভাগ দিয়ে সরকার সাইবার সন্ত্রাসকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল।

সিপি গ্যাং নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারণাকারী বলে দাবি করলেও সমালোচকরা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অ্যাস্টিভিস্টরাই মূলত তাদের আক্রমণের শিকার হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধচারী কয়েকজন নারীও তাদের সাইবার নিগ্রহের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

মঙ্গলবার সিপি গ্যাংয়ের ৪ লাখ টাকা অনুদান পাওয়ার খবর প্রচার হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে সমালোচনার মুখে পড়েছে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে ৫ জানুয়ারি গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন শুরুর পরে ওই আন্দোলন নিয়েও অনলাইনে কটূক্তি ছড়ানোর অভিযোগ আছে গ্রুপটির বিরুদ্ধে।

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে সেলফি তুলে নিজের ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করে সিপি গ্যাং এর কটূক্তির ‍মুখে পড়তে হয়েছে খোদ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককেও।

সিপি গ্যাংয়ের প্রধান রাসেল রহমানের ফেইসবুক পেইজ থেকে ছবিটি পোস্ট করে তাতে বলা হয়, “বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম সংসদ থেকে সেলফি দিয়েছেন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। উই আর সো প্রাউড অব হিম। গিনেস বুকে নাম উঠানোর প্রস্তাব করলাম।”

শুধু এটিই নয়, স্ত্রীসহ প্রতিমন্ত্রী পলকের একটি ছবি ফেইসবুকে শেয়ার করে সিপি গ্যাংয়ের সদস্য শাকিব রাদিতুল্লাহ বাহার লিখেছিলেন, “অ্যাডভোকেট জুনায়েদ আহমেদ পলক এমপিকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে দেখতে চাই (সেখানে কাজ পেলে বাংলাদেশের ইতিহাস শিক্ষার সুযোগ হবে)।”

রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের বিয়ে করা নিয়েও কটূক্তি ছড়াতে দেখা গেছে সিপি গ্যাংকে।

সিপি গ্যাংয়ের অনুদান প্রাপ্তির সমালোচনা করে রিশাদ আহমেদ রুশদী নামে একজন ফেইসবুকে লিখেছেন, “গালাগালি উদ্ভাবনের জন্য পাইছে...”

মুন্সী জাকির হোসেন নামে একজন লিখেছেন, “ছি: পি গে একটি লিমিটেড কোমপানি, আপনি চাইলেই কিছু শেয়ার কিনে মালিকানার অংশীদার হতে পারেন, ভুলে যাবেন না যে এটি একটি সাইকোদের অভয়ারণ্য মাত্র!”

মো. কায়সার লিখছেন, “একটু আগে খবরটা পড়ে টাস্কি খাইলাম। জয় গালিগালাজ।”

কামাল এইচ মজুমদার মুন নামে একজন লিখেছেন, “বেশ ভালো৷ সরকার চমৎকার কাজ করছে৷ আচ্ছা সিপি ই তাইলে আওয়ামী লীগ রিপ্রেজেন্ট করে৷ পরবর্তী বাজেটে হেফাজতের জন্যও চার চারা ষোলো কোটি বরাদ্দ থাকবে; আসুন ভাইলোগ দলে দলে তেঁতুল শফির সাথে গলা মিলায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁসি দাবি করি, দাবি না মানা হলে কতল ৷”

অনুদান পাওয়ার বিষয়ে সিপি গ্যাংয়ের রাসেল রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনুদান তো অনেকেই পেয়েছে, কিন্তু আমাদের অনুদান পাওয়া নিয়ে এতো কথা হচ্ছে কেন?

“আমরা মন্ত্রণালয়ে একটি ইনোভেটিভ ফান্ডের জন্য আবেদন করেছিলাম। আমাদের আইডিয়াটা ছিল ঢাকার ট্রাফিক সিস্টেমের লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে একটি অ্যাপ তৈরি করা।”

রাসেল বলেন, “আমাদের কোনো উদ্যোগ যদি জনগণের কাজে লাগে তাহলে তো কোনো অসুবিধা নেই। আমাদের এ আইডিয়াটি অনেকে পছন্দ করেছে। এ কারণেই হয়তো আমরা অনুদান পেয়েছি।”

ফেইসবুকে অনুদান পাওয়া নিয়ে সমালোচনা কেন হচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করছি, এ বিষয়ে কখনো কোনো কম্প্রোমাইজ করিনি। মূলত এ কারণেই নানা কথা বলে আমাদের নামে কুৎসা রটানো হয়।

“কিছু ব্যক্তি আছে যারা আমাদের কর্মকাণ্ড পছন্দ করে না। তারাই মূলত এসব করছে।”